শেয়ার বিজ ডেস্ক : বাণিজ্য উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এ আলোচনা শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে উভয় দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন বলে জানা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি বেশ খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খবর: এএফপি।
চীনের সঙ্গে সর্বশেষ দফার এ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশটির বাণিজ্য দূত রবার্ট লাইথিজার, অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন। এছাড়া চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হে দেশটির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এরই মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ আরও সহজ করে চীন একটি আইন পাস করানোয় এবারের আলোচনা ফলপ্রসূ হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাতেও আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। উভয় দেশের মধ্যে চলমান আলোচনার মধ্যে এটিকে ভালো খবর বলছেন অনেকে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে এখনও বড় ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হাজার হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্কারোপের মাধ্যমে বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা করেন। এর জবাবে চীনও পাল্টা শুল্কারোপ করলে দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে উভয় দেশের উৎপাদনকারী ও কৃষক বেশি সমস্যায় পড়েছেন। বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।
তবে সর্বশেষ শুরু হওয়ায় আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছেন, কিছু চীনা পণ্যে শুল্কারোপ অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া চীনের পক্ষ থেকেও কিছু ক্ষেত্রে অনমনীয় মনোভাব প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
এর আগে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য আলোচনার আগে চীনের প্রতি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর থেকে কড়াকড়ি কমানোর দাবি করেছিলেন মার্কিন বাণিজ্য আলোচকরা। কিন্তু চীন তা মেনে নেয়নি। বাণিজ্য আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ-সংক্রান্ত খবর বেরিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
সম্প্রতি আর্জেন্টিনার বুয়েন্স এইরেসে জি-২০ সম্মেলনে ৯০ দিনের জন্য বাণিজ্যযুদ্ধ স্থগিত করতে একমত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, যা ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। অর্থাৎ, ১ মার্চের মধ্যে নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে দেশ দুটিকে। যদি সেটা না হয়, তাহলে নতুন করে শুল্কারোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনও পাল্টা প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে রেখেছে। কিন্তু সর্বশেষ বৈঠকে আলোচনা ইতিবাচক হলে ট্রাম্প তার দেওয়া এ হুমকি থেকে সরে আসেন।
এছাড়া সম্প্রতি বৈদেশিক বিনিয়োগবিষয়ক নতুন একটি আইন পাস করেছে চীন সরকার। এতে দুদেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) শেষ দিনে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদের অধিকাংশই আইনটির পক্ষে ভোট দেন। অবশ্য বৈদেশিক কোম্পানিগুলোর চীনে বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে এখনও সমাধান হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।
বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধে ফের যুক্তরাষ্ট্র চীনের আলোচনা শুরু
