Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 3:46 am

বাণিজ্যের স্বার্থে জিসিসিতে ঐক্য চায় সৌদি আরব

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান উপসাগরীয় দেশগুলোকে ব্যবসায়ের স্বার্থে এক হওয়ার ডাক দিয়েছেন। তিনি বিদ্যমান সব ধরনের বাধা দূর করে ব্যবসা প্রসারে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে বলেছেন। খবর: আরব নিউজ।

সৌদি আরবের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আরব নিউজ জানায়, দেশটির অর্থমন্ত্রী যৌথ শুল্ক অঞ্চল নির্মাণ করা, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর বাইরে সাধারণ শুল্কের হার প্রয়োগের জন্য আহ্বান করেছেন। তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য একটি বিশেষ বাণিজ্য অঞ্চল গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন, যাতে ২০২৫ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক ঐক্য অর্জিত হয়।

তিনি সম্প্রতি রিয়াদে ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন কমিটির ১১৫তম বিশেষ সাধারণ সভায় উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) নিয়ে কথাগুলো বলেন। এতে জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন আল-জাদান। আরও অংশ নেন জিসিসির সাধারণ সম্পাদক নায়েফ আল-হাজরাফসহ আরও অনেক কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ।

আল-জাদান বলেন, সৌদি আরব যুবরাজ সালমানের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য চায়। সৌদি প্রেস এজেন্সিকে (এসপিএ) দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে তিনি জিসিসি দেশগুলোর মধ্যকার বিদ্যমান সব বাধা দূর করে সর্বস্তরে সবার সহযোগিতা চান। তিনি বৈশ্বিক উন্নয়নে ও দীর্ঘমেয়াদে এ অঞ্চলে নানা কৌশল বাস্তবায়নে জিসিসির পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা করেন।

একই সঙ্গে আল-জাদান বলেন, জিসিসি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমন্বয়, একীকরণ ও পারস্পরিক নির্ভরতা অর্জনের জন্য সব ক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সভায় উপস্থিত মন্ত্রীরা জিসিসি দেশগুলোর আর্থিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার করেন। তারা সুপ্রিম কাউন্সিলের ৪২তম সভায় যে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করছেন বলে জানান। পাশাপাশি ২০২৪ সালের মধ্যে স্বতন্ত্র শুল্কমুক্ত অঞ্চল গঠন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেন। তারা এ লক্ষ্যে কাস্টমস ইউনিয়ন অথরিটি ও গালফ কমন মার্কেট কমিটি গড়ার প্রস্তাব রাখেন।

একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেন জিসিসি সদস্যরা। এতে দীর্ঘমেয়াদে আইন ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন তারা। এবার আলোচনা সভাটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, রক্ষণশীল সুন্নি রাজতন্ত্রের দেশগুলোর এ জোট নিয়ে সন্তুষ্ট নয় ইরান। সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের সমন্বয়ে গঠিত এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে শিয়া অধ্যুষিত ইরানের সম্পর্ক বিপরীতমুখী। ইরানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরী সম্পর্ক রয়েছে জিসিসির। ইরানে ইসলামি বিপ্লবের দুই বছর পর ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় ১৯৮১ সালের মে মাসে যাত্রা করে জিসিসি।

সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে সবার অংশগ্রহণে একটি বাজার, কাস্টমস ইউনিয়ন, একই মুদ্রা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠনের অনুমোদন দিয়েছে জিসিসি। তবে আজও এসব সিদ্ধান্তের বেশিরভাগ বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া সদস্য দেশগুলোর নাগরিকদের অবাধ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও জিসিসির অর্থনীতি এখনও তেল রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ আয় আসে তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে। বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহের এক-পঞ্চমাংশ আসে এই ছয় সদস্য রাষ্ট্র থেকে।