শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় বাণিজ্য আলোচনায় ইতিবাচক ফল পেতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। গতকাল সোমবার গ্রেট হলে ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের ক্লোজিং সেশন শেষে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ লু কাং এ মন্তব্য করেন। খবর রয়টার্স।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক দফায় একে অন্যের ওপর শুল্কারোপের হুমকি দিলে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধাবস্থা শুরু হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই দেশ বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আগামী ১৫ থেকে ১৯ মে ওয়াশিংটনে আলোচনায় অংশ নেবে চীনের প্রতিনিধিদল। এতে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট লিউ হি। চলতি মাসের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদল বেইজিংয়ে আলোচনায় বসে। এতে সব বিষয়ে একমত না হতে পারলেও চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা কমেছে। বাকি বিষয়গুলো সমাধানে দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।
প্রতিবেদনমতে, বেইজিংয়ের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বেশ কিছু বিষয়ে চীন সরকারের কাছে দাবি করেছে। এর মধ্যে একটি হলো ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি ২০০ বিলিয়ন ডলার কমাতে হবে। অন্যদিকে বেইজিং চায় চীনের বিনিয়োগের বিষয়ে ওয়াশিংটন জাতীয় নিরাপত্তা নীতি কিছুটা সহজ করুক।
মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের তথ্যমতে, চীনের সঙ্গে ২০১৬ সালে দেশটির পণ্য ও সেবা বাণিজ্য হয়েছে ৬৪৮ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে চীন দেশটিতে রফতানি করেছে ৪৭৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র চীনে রফতানি করেছে ১৬৯ দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ওই বছর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত চুই তিয়ানকাই গত শুক্রবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য দীর্ঘ মেয়াদে চলতে পারে না। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস) আয়োজিত ‘ফরটি ইয়ার্স অব
ইউস-চীন রিলেশনস’ শীর্ষক আলোচনায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
গত মার্চে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কারোপের ঘোষণার পর থেকেই বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ট্রাম্প পাঁচ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দিলে পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দেয়। এরপর ট্রাম্প আরও ১০ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্কারোপের ঘোষণা দিলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এতে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়। যদিও এখন পর্যন্ত ওই শুল্ক কোনো দেশই আরোপ করেনি।