Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 8:27 pm

বাণিজ্য বিনিয়োগ ও এফটিএ স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করা প্রয়োজন। এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়ে উভয় দেশের আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে। মালয়েশিয়া এগিয়ে এলে এ চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে। এতে উভয় দেশ উপকৃত হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে বাংলাদেশে সফররত মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন, ইন্ডাস্ট্রি ও কমোডিটি-বিষয়ক মন্ত্রী দাতুক হাজাহ জুরাইদা বিনতে কামারুদ্দিনের নেতৃত্বে আগত ১৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক, হালকা যন্ত্রপাতি, চামড়াজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করছে। বাংলাদেশ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩০ কোটি ৬৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ১৫৭ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। মালয়েশিয়ার পামঅয়েল, ফার্নিচার, চকলেট, ফলমূলসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশে এসব পণ্যের কারখানা স্থাপন করলে অধিক লাভবান হবে। এখানে প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, ফলে কম খরচে এসব পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ পামঅয়েল আমদানি করে। ভোজ্যতেলের চলমান বিশ্বমূল্যের পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া পামঅয়েলের দাম কমালে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ থাকবে। বাংলাদেশের ফার্নিচারশিল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের সেভেন সিস্টার-খ্যাত রাজ্যগুলোয় প্রচুর ফার্নিচারের চাহিদা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, অনেকগুলোর কাজ প্রায় শেষের পথে। এখানে মালয়েশিয়া ফার্নিচার, কৃষিপণ্য প্রসেসিংসহ সংশ্লিষ্ট শিল্প খাতে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।

সফররত মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন, ইন্ডাস্ট্রি ও কমোডিটি-বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার বন্ধুরাষ্ট্র এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। উভয় দেশের চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ার ফার্নিচার, রাবারজাত পণ্য, চকোলেট ও শুকনো খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাংলাদেশে রয়েছে। উভয় দেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে পারে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে আগ্রহী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এএইচএম সফিকুজ্জামান ও অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) নূর মো. মাহবুবুল হক এবং আগত প্রতিনিধিদলের মালয়েশিয়ার ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মাদ জায়েদি বিন মোহা. কারলি, ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি (ইন্টারন্যাশনাল) জাইমে ইয়াহ, মালয়েশিয়া পাম অয়েল বোর্ডের ডিরেকটর জেনারেল দাতুক ডা. আহমদ পারভেজ বিন গোলাম কাদির, মালয়েশিয়ার পাম অয়েল কাউন্সিলের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মিসেস আজরিয়াহ বিনতে আজিয়ান, মালয়েশিয়ার টিম্বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নোরিদা বিনতে ইউসুফ, মালয়েশিয়ার রাবার বোর্ডের ডিরেক্টর জেনারেল দাতো জাইরোসানি বিন মোহা. নূর, মালয়েশিয়ার টিম্বার কাউন্সিলের পরিচালক খায়রুল বিন আনোয়ারসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।