রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও এসএলইসহ নানা ধরনের বাত রোগে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি আক্রান্ত হন। এর মধ্যে কিছু বাত রোগ আছে, যা অল্প বয়সী নারীদের বেশি হয়। এই রোগের কারণে গর্ভধারণ, সন্তান জš§দানসহ নারীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যাঘাত ঘটে। কারণ বাত রোগ সাধারণত নিরাময়যোগ্য নয়। তবে ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
কিছু কিছু বাত রোগের তীব্রতা সন্তান ধারণের পর বেড়ে যেতে পারে। আবার কিছু বাত রোগের তীব্রতা কমে যায়। তাই রোগের তীব্রতা বুঝে সন্তান নিতে হবে। বাত রোগ নারীকে বন্ধ্যত্ব করে না বা সন্তান ধারণে বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে এতে ব্যবহƒত কিছু ওষুধ নারীর প্রজননে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যাদের এসএলই আছে, তাদের গর্ভপাতের ঝুঁকি রয়েছে। বাত রোগে আক্রান্ত নারীদের অন্তঃসত্ত্বাকালে উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। গর্ভের সন্তানের অপরিপূর্ণ বিকাশ, অপরিপক্ব প্রসব প্রভৃতি ঝুঁকি থাকে। চিকিৎসকরা যত দিন বাত রোগে আক্রান্ত নারীকে সন্তান ধারণের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না, ততদিন নিরাপদ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। সন্তান ধারণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হয়তো ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার হতে পারে। রোগের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণে না এনে হঠাৎ গর্ভধারণ করা বিপজ্জনক। গর্ভধারণের আগে থেকেই ফলিক অ্যাসিড খেতে হবে।
যদি অন্তঃসত্ত্বা হয়েই পড়েন, তবে নিজে থেকে কোনো ওষুধ বন্ধ করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন দ্রুত। রোগের তীব্রতা বেড়ে গেলে গর্ভাবস্থায় তা নিয়ন্ত্রণে আনা মুশকিল। সে ক্ষেত্রে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে জানাতে হবে রোগের বিষয়টি। আর কী কী ওষুধ খাচ্ছেন তাও জানাতে হবে। গর্ভাবস্থায় স্ত্রীরোগ ও বাত রোগ বিশেষজ্ঞর কাছে ঘন ঘন ফলোআপ ও পর্যবেক্ষণ দরকার।
রাত রোগে আক্রান্ত নারীদের স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব। সিজারিয়ান লাগবে, এমন কোনো কথা নেই। পরিবারের অন্য সদস্যদের এ ক্ষেত্রে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। কিছু বাত রোগ প্রসব-পরবর্তী সময়ে বেড়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। কিছু ওষুধ মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে গিয়ে ক্ষতি করতে পারে। তাই নিরাপদ ওষুধ সেবনের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অধ্যাপক রওশন আরা
মেডিসিন ও বাত রোগ বিশেষজ্ঞ
গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল