প্রতিনিধি, লালমনিরহাট: উজানের ভারী ঢল ও বৃষ্টিতে তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে নদীপারের লোকালয়। কয়েক হাজার পরিবার পানবন্দি হয়ে পড়ায় গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন সড়কসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন হাজারো মানুষ। সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। প্রশাসন থেকে তালিকা করে দুর্গতদের সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গতকাল সকাল ছয়টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপরে এবং ধরলার শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার ও ধরলায় ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলার সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, মোগলহাট, কুলাঘাটের, বড়বাড়ী; কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার, কাকিনা ও ভোটমারী; পাটগ্রামের শ্রীরামপুর, পাটগ্রাম, বুড়িমারী, দহগ্রাম, জগৎবেড় ও বাউরা; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ও দুর্গাপুর; হাতিবান্ধার ডাউয়াবাড়ি, সিন্দুর্না, গড্ডিমারী, বড়খাতা, সিংগিমারী ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়নে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বানের পানি বাড়তে থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। দ্রুত শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট চান বানভাসী মানুষ। পশুপাখি নিয়ে বন্যার্তরা উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকেই উঁচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ সারছেন। নলকূপ ও টয়লেটে পানি ওঠায় বিশুদ্ধ পানির সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়ছেন তারা। জনপ্রতিনিধিরা ও প্রশাসনের লোকজন বলছেন, তারা বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। সব সময় খোঁজ নিচ্ছেন। দ্রুত তালিকা করে বানভাসীদের মাঝে সহায়তা দেয়া হবে। বর্ষা এলেই তিস্তা ও ধরলা মেতে ওঠে ভাঙাগড়ার খেলায়। পানিতে ভেসে যায় হাজারো মানুষের স্বপ্ন। তাই দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন স্থানীরা।
লালমনিরহাটের ডিসি মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, প্রতিটি উপজেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া আছে। আমরা বরাদ্দ দিয়ে রেখেছি। আপৎকালে একটা বরাদ্দের ব্যাবস্থাও আমাদের রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।