প্রতিনিধি, বান্দরবান : বান্দরবানে পাহাড়ে র্যাবের অভিযানে নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশিক্ষণ কমান্ডারসহ ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় বিপুল পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বান্দরবানের মেঘলায় র্যাব কার্যালয়ে পার্শ্ববর্তী পার্বত্য জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। এসময় র্যাব ১১ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল তানবির মাহমুদ পাশা ও র্যাবের কর্মকর্তা মশিউর উপস্থিত ছিলেন।
র্যাব জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া নিখোঁজ তরুণরা জঙ্গিবাদের প্রশিক্ষণ নেয়। জঙ্গিদের অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করে আসছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা একটি রাষ্ট্র বানাতে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। র্যাবের চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবর্তী ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনের ৯ সদস্যকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার জঙ্গিরা হলোÑকুমিল্লা সদর এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে ও সামরিক প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন ওরফে চম্পাই (২৫), নারায়ণগঞ্জ সদর এলাকার মো. ইউনুস সর্দারের ছেলে আলআমিন সর্দার ওরফে বাহাই (২৯), কামরাঙ্গীর চর এলাকার মো. আবুল কালমের ছেলে সাইনু ওরফে হুজাইফা (২১), সিলেট বিয়ানীবাজার এলাকার কামাল আহম্মেদ চৌধুরীর ছেলে তাহিয়াত চৌধুরী ওরফে পাভেল (১৯), সিলেটের শাহপরান এলাকার আব্দুল কাদিরের ছেলে মো. লোকমান মিয়া (২৩), কুমিল্লার লাকসাম এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মো. ইমরান হোসেন ওরফে শান্ত (৩৫), ঝিনাইদহ কোর্টচাদপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আমির হোসেন (২১), বরিশাল সদর এলাকার ফারুক হাওলাদারের ছেলে মো. আরিফুর রহমান লাইলেং (২৮) ও ময়মনসিংহের মো. গেয়াস উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া ওরফে বাকলাই (২৪)।
র্যা?বের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, ঘরছাড়া নিখোঁজ কয়েকজন তরুণের খোঁজে করতে গিয়ে নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়ার তথ্য বেরিয়ে আসে। এ পর্যন্ত চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গত বছরের অক্টোবর থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনের ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। ভিডিও দেখে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও ৭২ জনকে শনাক্ত করা গেছে। এছাড়া জঙ্গিদের পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে সহযোগিতাকারী পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ১৭ কেএনএফ সদস্যকে এরই মধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।