Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 1:51 pm

বান্দরবানে দেশের সর্বোচ্চ ঝরনা লাংলোক

আলাউদ্দীন শাহরিয়ার, বান্দরবান : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান। এ জেলার সাতটি উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ঝরনা। একেকটি ঝরনার সৌন্দর্য একেক রকমের। ঝরনাগুলো যৌবন ফিরে পায় মূলত বর্ষায়। বর্ষাকালীন ঝরনাগুলোর মধ্যে দেশের সবচেয়ে উচু সর্বোচ্চ ঝরনা হচ্ছে লাংলোক। অ্যাডভেঞ্চার সংগঠনগুলোর তথ্যমতে এ ঝরনার উচ্চতা ৩৮৯ ফুট। স্থানীয়দের ভাষায় লাংলোক মানে বাদুড় ঝরনা। এ ঝরনাটির স্থানে বাদুড়ের একটি গুহা রয়েছে।

লাংলোক ঝরনায় মূলত বর্ষাকালেই পানির প্রবাহ বেশি থাকে। বছরের অন্য সময়ে হাল্কা পানি থাকে। থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়ন বাজার থেকে ইঞ্জিন নৌকায় ২০ মিনিটের মতো পাড়ি দিলে পৌঁছবেন ঝরনার নিচে সাঙ্গু নদীঘাটে। খাড়া পাহাড় আর উঁচু নিচু পাহাড়ি পথ, ঘনজঙ্গল, পাথরে পাহাড় পেরোলে দেখা মিলবে মুগ্ধতা ছড়ানো ঝরনা লাংলোকের। একটু অসতর্ক বা অসাবধানতা হলেই পা পিছলে কয়েকশ ফুট নিচে পড়ে যাবেন।

স্থানীয় পাও খুমী পাড়ার বাসিন্দার পাওরিং খুমী ও নৌকার মাঝি সাওচিং বলেন, লাংলোক ঝরনাটির ওখানে একটু বাদুড়ের গুহাও আছে। বাদুড়ের গুহার নামেই ঝরনাটির নাম লাংলোক। আগে ঝরনাটি খুব বেশি পরিচিত ছিল না। কিন্তু ইদানীং পর্যটকরা ঝরনাটি দেখতে ভিড় জমায়। তবে ঝরনাটি বর্ষাতে বেশি সুন্দর। পায়ে হেঁটে খাড়া পাহাড় আর উঁচু নিচু পাহাড়ি বাঁকা পথ পেরিয়ে ঝরনাটিতে যেতে হয়। তিন্দু থেকে ঝরনাটির নিচে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট।

ভ্রমণকারী পর্যটক মাহমুদ, সাব্বির, সুজানা বলেন, ঝরনাটি ভ্রমণকারীদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে বছর কয়েক হলো। থানচি থেকে ইঞ্জিন নৌকায় সাঙ্গু নদীপথে তিন্দু বাজার। সেখান থেকে নদীপথে ইঞ্জিন নৌকায় বিশ মিনিটের পথ ঝরনার নীচে পৌঁছাতে। তারপর হেঁটে খাড়া পাথুরি পাহাড়, আঁকাবাঁকা ঝুঁকিপূর্ণ বিপজ্জনক পাহাড়ি পথ পেরোলেই দেখা মিলে ঝরনা। ট্রেকিং অভিজ্ঞতা আছে এমন যে কারও বড়জোর ৪০ মিনিটের মতো লাগবে ঝরনার নিচে পৌঁছাতে। তবে নতুনদের ক্ষেত্রে দেড় দুই ঘণ্টাও লাগতে পারে। এটিই সম্ভবত দেশের সবচেয়ে উঁচু থেকে ঝড়ে পড়া ঝরনা। দূর থেকে ঝরনা যতটাই না সুন্দর, তার চেয়ে বেশি উপভোগ্য হলো ঝরনার জলে গা ভেজানো।

এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, দর্শনীয় স্থানগুলোর সৌন্দর্যবর্ধন এবং রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করছে প্রশাসন। এ জেলার পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নতুন নতুন আরও দর্শনীয় স্থান খুঁজে বের করা হচ্ছে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে।