প্রতিনিধি, বান্দরবান: বান্দরবানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভূমিধসে প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বান্দরবান জেলায় টানা ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বান্দরবান জেলা অফিসার সনাতন মণ্ডল জানান, শুক্রবার সকালে ১১ থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় বান্দরবান ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে দুপুরের পর থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে ৭২ ঘণ্টার ভূমিধসের পূর্বাভাসও রয়েছে। বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার অনুরোধ রইল।
জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, চার দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পাহাড়ধসে থানচি ও সড়ক তলিয়ে গিয়ে আলীকদম উপজেলায় বন্ধ থাকা সড়ক যোগাযোগ ফের চালু হয়েছে। টানা বর্ষণে বান্দরবানের রুমা, থানচি, রোয়াংছড়িসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় শুক্রবারও পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড়ধসে সড়কে জমে যাওয়া মাটি সরানোর কাজ করছেন সেনাবাহিনী ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা। অন্যদিকে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়া নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুম, তুমব্রুসহ আশপাশের বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। দূরদূরান্তে আশ্রয় নেয়া বন্যার্তরা ফিরতে শুরু করে বাসাবাড়িতে। তবে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। প্লাবিত সড়ক ও ঘরবাড়িগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। সড়ক যোগাযোগও চালু হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাতের কারণে আতঙ্ক কাটেনি দুর্গত এলাকার মানুষের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলো থেকে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য সরকারিভাবে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলার ৩৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড়ধসে বিচ্ছিন্ন হওয়া থানচি সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কিছুটা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের।
