প্রতিনিধি, বান্দরবান: বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে ফের গোলাগুলি হয়েছে। গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী অধিবাসীদের মধ্যে। গতকাল বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু-আমতলী, ফাত্রাছিরি, তুইঙ্গাঝিরি সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।
পরিদর্শনকালে রেজু-আমতলী বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় বিজিবি মহাপরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া প্রত্যেকটি গুলির হিসাব বিজিবির কাছে রয়েছে। মর্টারশেল নিক্ষেপ, আকাশসীমা অতিক্রম এবং প্রত্যেকটা ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মিয়ানমার কূটনীতিকভাবে উত্তরও পাঠিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্তের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে চেষ্টা করা হচ্ছে, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির পতাকা বৈঠক করার। ইতোমধ্যে যোগাযোগও করা হয়েছে। খুব শিগগিরই হয়তো ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সরাসরি সব বিষয় উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে রোববার মধ্যরাত থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ৩৪, ৩৫ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় ফের গোলাগুলি হচ্ছে। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর ফের গোলাগুলির শব্দে গোটা সীমান্তজুড়েই সীমান্ত অধিবাসীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আতঙ্কে রয়েছে সীমান্ত অঞ্চলের মানুষজন। গোটা সীমান্ত পরিস্থিতিই এখন অনেকটায় থমথমে। কিন্তু বিজিবির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর দৌছড়ি সীমান্তের ছেড়ারকুল সীমান্ত এলাকায় নোম্যান্সল্যান্ডে মাইন বিস্ফোরণে এক ব্যক্তির ডান পায়ের নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত ব্যক্তির নাম আব্দুল কাদের। এর আগে ২ অক্টোবর তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে মাইন বিস্ফোরণে ওমর ফারুক নামে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়। এ সময় সাহাবুল্লাহ নামে আরও একজন রোহিঙ্গা যুবক আহত হন। তারা দুজন তুমব্রু কোনাপাড়া নোম্যান্সল্যান্ড আশ্রয়কেন্দ্রের রোহিঙ্গা। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি নাগরিক অংখ্যথাইন তঞ্চঙ্গ্যার বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার বাড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ায়। এর আগে তুমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে উড়ে যায়। সীমান্তে একের পর এক ঘটছে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা।
