বাপেক্সের সাবেক ডিজিএম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নাজমা বেগম ও তার স্বামী আহসানুল বাশারের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গতকাল সোমবার মামলা দুটি দায়ের করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় (সজেকা) ঢাকা-১ এ মামলা দুটি দায়ের করেন।

এজাহারে বলা হয়, নাজমা বেগম দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তার নামে ৭১ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য উপস্থাপন করেন। অনুসন্ধান ও সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার নামে ১ কোটি ১২ লাখ ২৫ হাজার ৭৯৩ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। অর্থাৎ তিনি ৪০ লাখ ৬১ হাজার ১৯৩ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্যসংবলিত সম্পদ বিবরণী দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করেন।

নাজমা বেগম নিজ নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৮৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫০৯ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখেন। অর্জিত সম্পদের মধ্যে ৪০ লাখ ৬১ হাজার ১৯৩ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্যসংবলিত সম্পদ বিবরণী দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ে তার নামে ঢাকার লালবাগের আজিমপুর রোডে ১ কোটি ৩ লাখ ৬১ হাজার ১৯৩ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি। রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬শ টাকা মূল্যের ৫ কাঠার একটি প্লটসহ মোট ১ কোটি ১২ লাখ ২৫ হাজার ৭৯৩ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ। আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, স্বর্ণালংকার, হাতে নগদ ও ব্যাংক জমা বাবদ মোট ১৫ লাখ ৯১ হাজার ২৬০ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১ কোটি ২৮ লাখ ১৭ হাজার ৫৩ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য ও রেকর্ডপত্র পাওয়া গেছে।

নাজমা বেগমের আয়-ব্যয়ের তথ্য পর্যালোচনায় তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ২২৫ টাকা।

স্বামী আহসানুল বাশারকে দান ও পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট ব্যয় পাওয়া গেছে ৬৯ লাখ ৮ হাজার ৬৮১ টাকা। স্বামীকে দান ও পারিবারিক ব্যয়সহ সম্পদ অর্জনে ব্যয়িত মোট ১ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৪ টাকার বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ২২৫ টাকা। এক্ষেত্রে তার আয় অপেক্ষা অতিরিক্ত ৮৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫০৯ টাকার সম্পদ অর্জনের স্বপক্ষে আয়ের উৎস সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র অনুসন্ধানকালে পাওয়া যায়নি। যা তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ হিসেবে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

আসামি আহসানুল বাশার নিজ নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫০ লাখ ৬৫ হাজার ১৯৭ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ে তার নামে স্থাবর সম্পদ হিসেবে মায়ের কাছ থেকে হেবা মূলে পাওয়া গোপীবাগে ৪.৭০ কাঠা জমির ১/৬ অংশ এবং অস্থাবর সম্পদ হিসেবে এস,এম কার্টুন অ্যান্ড এক্সেসরিজ লিমিটেডে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার, এস এম আবাসন লিমিটেডে ৩ লাখ টাকার শেয়ার, শ্যামল বাংলা মিডিয়ার বাংলা ভিশনে ২১ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার, ডায়নামিক স্টিল কোম্পোনি লিমিটেডে ৫০ লাখ টাকার শেয়ার, ব্যবস্যার মূলধন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, একটি ব্যক্তিগত গাড়িবাবদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং হাতে নগদ ও ব্যাংক জমা ৫০ লাখ ৫৫ হাজার ২১০ টাকাসহ মোট ১ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ২১০ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য/রেকর্ডপত্র পাওয়া গেছে। অর্থাৎ তার নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ১ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ২১০ টাকা।

সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে আহসানুল বাশারের আয়-ব্যয়ের তথ্য পর্যালোচনায় গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ১ কোটি ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০২ টাকা। তার পারিবারিক ব্যয় ৩১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৮৯ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ সম্পদ অর্জনে ব্যয় মোট ১ কোটি ৬২ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৯ টাকার বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ১ কোটি ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০২ টাকা। এক্ষেত্রে তার আয় অপেক্ষা অতিরিক্ত ৫০ লাখ ৬৫ হাজার ১৯৭ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের স্বপক্ষে আয়ের উৎস সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে পাওয়া যায়নি, যা তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০