লালমাটির বরেন্দ্র অঞ্চল, উঁচু-নিচু ভূমি আর সবুজ অরণ্যের পর্যটন কেন্দ্র বাবুডাইং। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। সবুজে ঘেরা মনোরম পরিবেশ পর্যটকের মনের খোরাক পূরণ করে। এলাকাটির অবস্থান চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এলাকা বাবুডাইং। প্রাকৃৃতিকভাবে গড়ে ওঠা লেক ও সবুজের সমারোহে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে বেড়াতে আসেন ভ্রমণপ্রিয়রা। এলাকাটি ‘পিকনিক স্পট’ নামে পরিচিত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঝিলিম ইউনিয়নের বিলবৈঠা মৌজা ও রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাবুডাইং মৌজার প্রায় ২০০ একর জায়গাজুড়ে পর্যটন কেন্দ্রটি। জেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। এলাকাটি উঁচুনিচু। শতাধিক টিলা রয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে গড়ে ওঠা লেক বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষে পরিবেষ্টিত। এ সবকিছুই দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত পর্যটক আসেন। প্রকৃতির নয়নাভিরাম পরিবেশ দেখে অভিভূত হয়ে ওঠেন দর্শনার্থীরা। কিছু কিছু টিলায় রয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের বাস।
থাকার জন্য কোনো হোটেল, মোটেল কিংবা গেস্ট হাউজ নেই এখানে। তাছাড়া আশেপাশে নেই কোনো খাবারের হোটেল। এজন্য পিকনিকের উদ্দেশ্যে দল বেঁধে আসেন দর্শনার্থী। শীতকালে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয় বাবুডাইং।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রয়াত জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম বাবুডাইংকে ঘিরে বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন। তবে তার আকস্মিক মৃত্যুতে গৃহীত পরিকল্পনাগুলো আলোর মুখ দেখেনি। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও নিরাপত্তার অভাবে ঝামেলায় পড়তে হয় পর্যটকদের। লোকালয় থেকে বেশ কিছু দূরে এর অবস্থান হওয়ায় বখাটেদের হাতে শারীরিক নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হয় পর্যটকদের। নিরাপত্তার কারণে পর্যটনশিল্পের সম্ভাবনাময় এলাকাটি দিন দিন দর্শনার্থী হারাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বাবুডাইং সুন্দর একটি পিকনিক কর্নার হয়ে উঠেছিল। প্রায় দিনই দূরদূরান্তের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ বিনোদনপিয়াসীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে বেড়াতে আসতেন। কিন্তু এক বছর থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। কারণ অনেক দর্শনার্থী বিভিন্ন সময় বখাটেদের হাতে নাজেহাল হয়েছেন।
যেভাবে যাবেন
রেলপথে যেতে চাইলে রাজধানীর কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে প্রথমে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সড়কপথে সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জে যাওয়া যায়। গ্রামীণ ট্রাভেলস, দেশ ট্রাভেলস, হানিফ, তুহিন এলিট, শ্যামলী মডার্ন, লতা, নাহার প্রভৃতি পরিবহনের বাসে যেতে পারেন। রাজধানীর কল্যাণপুর, কলাবাগান, গাবতলীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে যায় এসব বাস। প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আধঘণ্টা পরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বাসগুলো। জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগও সড়কপথনির্ভর। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশ্বরোড মোড় থেকে অটোরিকশায় যাওয়া যাবে বাবুডাইং।
ফারুক আহমেদ চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ