প্রতিনিধি, চবি: বাহির থেকে মসলার প্যাকেট কিনে নিতে বলায় বাবুর্চির অণ্ডকোষে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ডাইনিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল আলী। তিনি চবির শাহ আমানত হলের সহকারী বাবুর্চি।
অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেনÑচবির সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ এবং বিবিএ অনুষদের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোরশেদুল আলম রিফাত।
ভুক্তভোগী বাবুর্চি মোহাম্মদ আব্দুল আলী বলেন, চবি ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের রিফাত ও সিএপসির আরিফ নামের দুইজন হলের ডাইনিংয়ের রান্নাঘরে রান্না করার জন্য এসে আমার কাছে আদা রসুন মসলা চায়। আমি তাদের এসব দিয়েছি। শুধু বলেছি, আপনাদের মতো প্রতিদিন এমন অনেক গ্রুপের লোকজন আসে মসলা ও নানা জিনিসপাতি নিতে। এখন দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেশি। বাহিরে দোকানে মসলার ছোট ছোট প্যাকেট পাওয়া যায়। ওখান থেকে আপনারা একটা প্যাকেট নিয়ে আসলে ভালো হয়। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে ওরা আমাকে কিল-ঘুষি ও লাথি শুরু করে দেয়। একপর্যায়ে তারা আমার অণ্ডকোষে দুইটা লাথি মারে। অণ্ডকোষ ফুলে গেছে। ব্যথার জন্য প্রস্রাব করতে পারছি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোরশেদুল আলম রিফাত বলেন, এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা ওখানে একটু রাতের রান্না করতে গেছিলাম জাস্ট। ওনার সঙ্গে একটু তর্ক হয়েছে। এর বেশি কিছু হয়নি।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অপর ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ তার ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। যার কারণে, তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে হল-গার্ড আমাকে বলেছেন। প্রক্টরের সঙ্গেও কথা হয়েছে। একজন হাউস টিউটরকে বিষয়টি দেখাশুনার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। আমি আগামীকাল হলে গিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, আমরা শুনেছি। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। আমরা একটা ঝামেলায় আছি। ওইটার সমাধান করে এই বিষয়ে খোঁজ খবর নেব।
ভুক্তভোগী বাবুর্চি আব্দুল আলী বর্তমানে চবি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসারত অবস্থায় আছেন। মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত ডা. আতাউল গনি পারভেজ বলেন, উনি অণ্ডকোষে আঘাত পেয়েছেন। জায়গাটা খুবই সেনসিটিভ। তাই, আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে দেখতে হবে যে, জায়গাটার কী অবস্থা। আমরা এখন পর্যবেক্ষণে রেখেছি। যদি অবস্থা খারাপ হয়, তাহলে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে।
