নিজস্ব প্রতিবেদক: ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির এক মামলায় ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল দুপুর আড়াইটায় দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেগুনবাগিচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করে। ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক মো. সামছুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানিয়েছে, ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে বাবুল চিশতী, তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারের পর বাবুল চিশতী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। এখন দুদক ডেকেছে, আমরাও এসেছি। তদন্ত চলছে দেখা যাক কী হয়। একটি ব্যাংকে এককভাবে একজন পরিচালকের কিছু করার নেই।’
এর আগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। মামলায় বাবুল চিশতীর স্ত্রী রুজী চিশতী ও ফারমার্স ব্যাংকের এসইভিপি এবং গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিছুদিন আগে দুদকের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখায় চিঠি দিয়ে ওই ছয়জনসহ তদন্তের মুখে থাকা ফারমার্স ব্যাংকের ১৭ জন কর্মকর্তা ও গ্রাহকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ফারমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাবুল চিশতী ব্যাংকটির গুলশান শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা ও উত্তোলন করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে বাবুল চিশতী তার স্ত্রী, ছেলেমেয়েদের ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন শাখায় থাকা মোট ২৫টি হিসাবে অর্থ নগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় প্রায় ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
উল্লেখ্য, ঋণ জালিয়াতির কারণে প্রতিষ্ঠার চার বছরেই বড় সংকটের মুখে পড়েছে ফারমার্স ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছে। আর ঋণ বিতরণে একক আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগে বাবুল চিশতীকেও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

Print Date & Time : 26 June 2025 Thursday 10:35 pm
বাবুল চিশতীসহ চারজন আটক
পত্রিকা ♦ প্রকাশ: