শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে বার্লিনে অনুষ্ঠিত বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের ওই বৈঠকে ফ্রান্স ও জার্মানির কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠকে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ইউক্রেন ঘিরে চলা উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে লাখের বেশি সৈন্য জড়ো করায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে এ উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। খবর: রয়টার্স।
বার্লিনে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাশিয়ার দূত দিমিত্রি কোজাক এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ডনবাসে যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সালে হওয়া চুক্তির বিষয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যার কারণে দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি। ‘আমরা সমাধানে আসতে পারিনি,’ বলেছেন তিনি।
তবে ইউক্রেনের দূত আন্দ্রিই ইয়েরমাক বলেছেন, দুই পক্ষ কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারলেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করছি শিগগিরই আমরা ফের মিলিত হবো এবং আলোচনা চালিয়ে যাব। আলোচনা ফলপ্রসূ করতে সবাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ডনবাস নামে পরিচিত উইক্রেনের বিচ্ছিন্ন হতে চাওয়া দু’টি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে আপাত যুদ্ধবিরতি চললেও সেখানে যেকোনো সময় বড় ধরনের যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপের (ওএসসিই) পর্যবেক্ষকরা সেখানে নিয়মিত সহিংসতার ঘটনা রেকর্ড করছেন; কখনো কখনো দিনেই শতাধিক ঘটনারও খবর পেয়েছেন তারা।
ইউক্রেনের ভাষ্য, ২০১৪ সাল থেকে ওই অঞ্চলে যুদ্ধে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ২০১৫ সালে দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের সঙ্গে রাশিয়া, ইউক্রেন ও ওএসসিইর প্রতিনিধিরা ১৩ দফার একটি চুক্তিতে পৌঁছান, তাতে ফ্রান্স ও জার্মানিও সমর্থন দেয়।
ইউক্রেন ইস্যুতে কোয়াড কূটনীতিকদের বৈঠক: এদিকে চীনবিরোধী জোট হিসেবে পরিচিত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ঘিরে গঠিত কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগের (কিউএসডি বা কোয়াড) শীর্ষ কূটনীতিকরা স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বৈঠকে বসেছেন। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক। জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা এবং চীনের আধিপত্য বিস্তার রোধে মূলত এ বৈঠক বলে জানা গেছে। তবে ইন্দো-প্যাসিফিকে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে গঠিত জোট কোয়াডের কূটনীতিকরা ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে উত্তেজনার বিষয়টিও আলোচনায় আনেন।
ইউক্রেন ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও মস্কোর উত্তেজনার মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছেন।