Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 4:21 pm

বার্ষিক আর্থিক বিবরণী জমা দিতে ব্যর্থ ১০ বিমা কোম্পানি

নিয়াজ মাহমুদ: হিসাববছর শেষ হওয়ার সাত মাসের মধ্যেও নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের ১০ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো তাদের গত বছরের (২০১৬) নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন যথাসময়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, একই সঙ্গে চলতি হিসাব বছরের প্রথম (মার্চ ৩১, ২০১৭) ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের (জুন ৩০, ২০১৭) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনও জমা দিতে পারেনি কোম্পানিগুলো। এ অবস্থায় কোম্পানিগুলোর পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে বিএসইসি। এ সময়ের মধ্যেই কোম্পানিগুলোকে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী বিএসইসিতে জমা দিতে হবে।

সিকিউরিটিজ আইনে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক বছর শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। তবে বিএসইসির অনুমতি সাপেক্ষে তা পরে অনুষ্ঠানের সুযোগও আছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, এ সুযোগের অপব্যবহার করছে অনেক কোম্পানি। তারা হিসাববছর শেষ হওয়ার সাত থেকে আট মাস পরে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে এজিএম করছে।

আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে ব্যর্থ বিমা কোম্পানিগুলো হলোÑপ্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানলাইফ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও প্রগেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এ ১০টি  কোম্পানিই চলতি হিসাব বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনও তৈরি করতে পারেনি।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করেই আর্থিক প্রতিবেদন ও এজিএম নিয়ে কালক্ষেপণ করছে। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বেশি সময় পদে থাকতে কালক্ষেপণ করছে। এর ফলে পর্ষদ লাভবান হলেও বিনিয়োগকারীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কঠোর না হওয়ায় কোম্পানিগুলো তাদের খেয়ালখুশিমতো এজিএম করছে। এতে বিনিয়োগকারীরা সঠিক সময়ে ডিভিডেন্ড প্রাপ্তি

থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নির্ধারিত সময়ে এজিএম করতে না পারা কয়েকটি কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা নির্ধারিত সময়ে এজিএম না করাকে কোম্পানির ব্যর্থতা বলতে নারাজ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে আবেদন করে সময় বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

বিএসইসির শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে শেয়ার বিজকে বলেন, ‘যেসব তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসাব বছর শেষের ছয় মাসের মধ্যে আর্থিক বিবরনী দাখিল এবং এ সময়ের মধ্যে এজিএম করতে ব্যর্থ হবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যর্থ কোম্পানিকে ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হবে। তবে কমিশন যদি কোম্পানিগুলোকে সময়বৃদ্ধি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকে না। বাড়িয়ে দেওয়া সময়ের মধ্যে আর্থিক বিবরনী জমা দিতে ব্যর্থ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে জানান তিনি।

এদিকে (বিএসইসি) পৃথক নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত জীবন বীমা কোম্পানি ছাড়া অন্যান্য কোম্পানিকে তাদের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রান্তিক শেষ হওয়ার ৪৫ দিন এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে কমিশন ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। আর জীবন বীমা কোম্পানির

ক্ষেত্রে প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন ৯০ দিন এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে কমিশন ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হবে। তবে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশেষ ক্ষেত্রে সময় বাড়াতে পারে বিএসইসি।