নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা শহরের ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) চূড়ান্ত করেছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক গ্যাজেট প্রজ্ঞাপনে এ রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার জনসংখ্যার ঘনত্বকে নাগরিক সুবিধার সঙ্গে আনুপাতিক রেখে ও আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পরিকল্পিত অবকাঠামো গড়ে তুলে আরও ৬০ লাখ মানুষকে বসবাসের সুবিধা দেয়া, পথচারীবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে আনা, গ্রিন নেটওয়ার্ক-ব্লু নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নগরবাসীর জন্য মাঠ-পার্ক তৈরি, সড়ককে গণপরিসরে পরিণত করাসহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা এই পরিকল্পনায় দেয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কৈবর্ত কক্ষে ‘বাসযোগ্য ঢাকার জন্য নীতি ও পরিকল্পনাবিষয়ক পর্যালোচনা’য় বক্তারা দ্রুত ড্যাপ বাস্তবায়নের দাবি তুলে ধরেন। ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাম উদ্দিন চিশতি, ড্যাপের ডেপুটি টিম লিডার খন্দকার নিয়াজ রহমান, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেনÑরায়েরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাইস্কুল, আলি হোসেন বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাইকেলার্স অব বাংলাদেশ, সোসাইটি অব দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার (এসডিএসএল), ঢাকা পল্লিসেবা সংস্থা, সেন্ট্রাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিডিপি),
টিম ইনক্লুশন বাংলাদেশ, একটিভ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সাইক্লিস্ট, ওয়াল্ড কনসার্ন, প্রাস বাংলাদেশ, ইউথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক, কার ফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রতিনিধিরা।
হিসাম উদ্দিন চিশতি তার প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, ড্যাপে নাগরিক সব ধরনের সুবিধাদি যেমন ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা,
খাল পুনরুদ্ধার, মাঠ-পার্কসহ বিভিন্ন উš§ুক্ত স্থান তৈরি ও পুনরুদ্ধার ভূমির ব্যবহার, যাতায়াত ব্যবস্থা, ঐতিহ্যবাহী স্থান রক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে।
খন্দকার নিয়াজ রহমান বলেন, একই এলাকায় ব্লকভিত্তিক আবাসন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও বিনোদন কেন্দ্রসহ সব সুবিধা পরিকল্পনা ড্যাপে রয়েছে। ফলে হাঁটা দূরত্বে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পরিষেবা যেন মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে তা নিশ্চিত করা সম্ভব। এতে নগরে হেঁটে যাতায়াতের ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে ও দূষণ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার ভেতরে ৫৬৬ কিলোমিটার নদীসহ পুকুরগুলোকে পুনরুদ্ধার করে জলাবদ্ধতা নিরসন ঢাকার আশপাশে বয়ে চলা নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রস্থ সড়ক, প্রস্থ ফুটপাত নির্মাণ ও বৃক্ষরোপণ বিষয়ে ড্যাপে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবনাটিতে গণপরিবহন ব্যবস্থা সড়ক, নৌ ও রেলপথকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
গাউস পিয়ারী তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে আমাদের নগরকে একটি বসবাসযোগ্য নগরে রূপান্তর করা প্রয়োজন। মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় নগরীরর মাঠ-পার্ক, জলাশয়, উš§ুক্ত স্থানসহ সব সুবিধা দরকার। এমনকি কভিড-১৯-এর সময় আমরা বুঝতে পেরেছি, বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতেও একটি নিরাপদ ও বসবাস যোগ্য নগরী কতটা জরুরি।