বাস্তবতা বিবেচনায় পণ্য ছাড়ে বিলম্ব ফি মওকুফ করুন

কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রভাব: বন্দরে পণ্য খালাসে দেরি গুনতে হবে জরিমানা’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকালের শেয়ার বিজে, সেটি বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য সুখকর নয়। তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী জাহাজ থেকে আমদানি পণ্যের কনটেইনার চারদিন বন্দরের ইয়ার্ডে বিনা ভাড়ায় রাখার সুযোগ পান আমদানিকারকরা। এরপর ২০ ফুট লম্বা সাইজের কনটেইনারের জন্য প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন ৬ মার্কিন ডলার স্টোর ভাড়া গুনতে হয়। তার পরবর্তী সপ্তাহ প্রতিদিন একই সাইজের কনটেইনারে ১২ ডলার এবং ২১তম দিন থেকে প্রতিদিন ২৪ ডলার হিসেবে ভাড়া দিতে হয় আমদানিকারকদের।


স্থল, নৌ, বিমান কিংবা সমুদ্রÑসব বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থের বিনিময়ে সেবাদান করে থাকে। বন্দর রক্ষণাবেক্ষণে অনেক ধরনের ব্যয় হয়। তা স্বাভাবিক কিংবা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই হোক। বরং অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কিছু পরিচালন ব্যয় এমনিতেই বেড়ে যায়। দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার পর এক সপ্তার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় সময়মতো পণ্যবাহী কনটেইনার ডেলিভারি নিতে পারেনি আমদানিকারকরা। পণ্য খালাস-জাহাজীকরণে ব্যবহার্য ইন্টারনেটভিত্তিক সফটওয়্যার ‘অ্যাসাইকুডা’ সম্পূর্ণ অকার্যকর ছিল। ফলে সময়মতো পণ্য জাহাজীকরণ করতে পারেননি রপ্তানিকারকরা। এতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কনটেইনার ভেলিভারি নিতে অতিরিক্ত ছয়দিন সময় লাগে। ফলে অতিরিক্ত সময়ের জন্য আমদানিকারকদের গুনতে হচ্ছে জরিমানা।

গত ৬ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন কাস্টমস আইন ‘কাস্টমস আইন, ২০২৩’। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর্মকর্তাদের জন্য শুল্ক ফাঁকি বা আইনের লঙ্ঘন উদ্ঘাটনের জন্য পুরস্কার এবং রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করলে আর্থিক প্রণোদনা পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া নিষিদ্ধ পণ্য নিয়ে এলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। নতুন আইন রাজস্ব সংগ্রহ ও বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার (ডব্লিউসিও) অনুমোদিত আন্তর্জাতিক চুক্তি ও কনভেনশন অনুযায়ী এবং আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা, হিসেবে পরিগণিত ও পরিপালিত হবেÑএটিই কাম্য।

কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলেনের কারণে সংঘটিত বিলম্বের জন্য বন্দর ব্যবহারকারীদের কোনো দায় নেই। যে কাজের জন্য তাদের দায় কিংবা অভিসন্ধি নেই, সে অনাকাক্সিক্ষত বিলম্বের জন্য তাদের জরিমানা করা সঙ্গত হবে না। এখানে শুল্ক ফাঁকি বা আইনের লঙ্ঘনের কোনো বিষয় নেই। বরং যথাসময়ে পণ্য খালাস কিংবা জাহাজীকরণ করতে না পারলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। পচনশীল দ্রব্য তো পচেও যেতে পারে, অনেক পণ্যের মানও কমে যাবে। ফলে কম দামে বিক্রি করতে হতে পারে। তাই বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে জরিমানাযোগ্য আইন শিথিল করা হবে বলেই প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০