Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 2:52 am

বাড়ছেই পেঁয়াজের ঝাঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পেঁয়াজের ঝাঁজ যেন কমছেই না। টানা বৃষ্টির পর আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় রাজধানীসহ আশপাশের খুচরা বাজারগুলোয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। গতকাল রাজধানীতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে। কয়েক দিন আগে এ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি দরে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজিও।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি, মাছসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দামই বাড়তি রয়েছে। যার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বৃষ্টিকেই দায়ী করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে ৭৫-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিগুণ বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকা কেজি দরে। মাঝে কিছুটা কমলেও আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে যুক্তি দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগস্টের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে আড়তে পেঁয়াজ, রসুন ও আলু সংরক্ষণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচে।

এদিকে গত সপ্তাহের পর কিছুটা কমছে কাঁচা মরিচের দাম। গতকাল বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম কিছুটা বাড়লেও আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদিপণ্যের দাম। গতকাল কেজিপ্রতি চীনের আদা ১৪০ টাকা এবং কেরালা আদা ১৫০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মসলার মধ্যে কেজিপ্রতি দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৫০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ টাকা, হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্য তেলের দাম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। গতকার বাজারে ব্র্যান্ডভেদে পাঁচ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা, প্রতি লিটারে এক-দুই টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা, শিম ১৪০ টাকা, হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা, দেশি টমেটো ১০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা, কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালংশাক অঁাঁটি ২০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, পারিজা চাল ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৬০ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৮ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় বিআর-২৮ ৪৮ টাকা, দেশি বিআর-২৮ ৫২, নাজিরশাইল (কাটারি) ৬৩ টাকা, নাজিরশাইল (নরমাল) ৬৫ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙাশ প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকারভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম আগের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।