বিইউপিবিজিএ’র বিজনেস গ্র্যাজুয়েটদের মিলনমেলা

প্রতিদিন একঘেয়ে জীবন, রুটিনচক্রে ঘূর্ণায়মান। অ্যালার্ম বাজলেই শুরু হয় প্রস্তুতি, অফিসের জন্য দৌড়, সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে বিছানার কাছে সমর্পণ। তবুও বলতে হয় ভালো আছি এই যান্ত্রিক শহর আর সময়ের মধ্যে। নিরস ভালো থাকার এ জীবন কিছুটা সরস হয় একটু ছুটি পেলে। সেদিন যদি দেখা মেলে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে, তাহলে সেই সরসের রসদটাই হয়ে ওঠে অন্যরকম! ঠিক এভাবেই দীর্ঘদিনের না দেখা বন্ধু, অনুজ আর অগ্রজদের নিয়ে চমৎকার এক আনন্দঘন মুহূর্ত কাটালেন বিইউপিবিজিএ’র সদস্যরা।

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস বিজনেস গ্র্যাজুয়েট অ্যালামনাই (বিইউপিবিজিএ) সম্প্রতি ঢাকার অদূরে সাভারের মির্জানগরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণস্বাস্থ্য পিএইচএ প্রাঙ্গণে বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করে। অ্যালামনাইয়ের সদস্য ও তাদের পরিবার-পরিজনের অংশগ্রহণে এ বনভোজন মুখর হয়ে ওঠে। সেদিন গণস্বাস্থ্য পিএইচএ’র সবুজ গাছপালা ঘেরা প্রাঙ্গণটি হয়ে উঠেছিল এক আত্মিক মিলনমেলায়। রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় যাত্রা শুরু করে সকাল সাড়ে ৯টায় বনভোজন স্থানে পৌঁছেই দীর্ঘদিন না দেখা বন্ধুকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্যে এরই প্রমাণ মেলে। সেলফি আর ক্যামেরার ফ্লাশের ঝলকে ফুটে ওঠে শতস্মৃতির মুহূর্ত। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় সকালের নাস্তাপর্ব। এরপর আর বসে থাকা নয়। অ্যালামনাইয়ের সদস্য, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে এ প্রাঙ্গণটি কিছুক্ষণের জন্য হয়ে ওঠে বড় একটি ক্রীড়াঙ্গনে।

খেলাধুলার শুরুটি ছিল শিশুদের দিয়ে। প্রথমে এক থেকে চার। এরপর চার থেকে ১২ বছরের শিশুদের দৌড়, পুরুষদের ডার্ট ও ক্রিকেট। নারীদের বালিশ খেলা পুরো আয়োজনটিকে করে আরও মনোরম। ততক্ষণে বেলা গড়িয়ে দুপুর। খেলার ছলে সময় পেরিয়ে এসেছে দুপুরের খাবারে। ক্ষুধা আর ক্লান্তি শরীরকে অলস করলেও মন তখনও দৃঢ়। পাশেই রান্নার স্থান থেকে ভেসে আসা ঘ্রাণ মনকে প্রাণবন্ত রেখেছে। খাবার টেবিল প্রস্তুত। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এক টেবিলে নানারকম মুখরোচক খাবারের সঙ্গে সেলফি কী বাদ যায়! সেলফি বাদ না গেলেও খাবার টেবিলে বসে বন্ধুদের অনুযোগে বাদ গেছে স্বাস্থ্যসচেতনদের ডায়েটের চিন্তা।

এমন ভারী খাবারের পর শরীরের অলসতা কাটানো প্রয়োজন। তাইতো আয়োজনে কমতি ছিল না। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নিজেদের মধ্যেই যে এত ভালো পারফরমার ছিল, তা হয়তো অনেকের জানা ছিল না। ঘরোয়া পরিবেশে এমন মনমাতানো আয়োজন কেবল স্মৃতির ফ্রেমকেই ভারি করেনি বরং মুগ্ধ করেছে সবাইকে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর পুরো আয়োজন শেষ হতে পারত; কিন্তু হয়নি। কেননা খেলাধুলার বিজয়ীদের পুরস্কার, র‌্যাফেল ড্র ও অ্যালামনাইয়ের নতুন ওয়েবসাইট উšে§াচন দিনব্যাপী এ আয়োজনকে করে পরিপূর্ণ।

দিন শেষে সন্ধ্যা নামে। সময় হয় কংক্রিটের নগরীতে ফিরে আসার। পরদিন থেকে আবার শুরু ব্যস্ত জীবনের পথচলা। জীবনে চলার জন্য নানা অনুষঙ্গ কাজ করে। সেদিনের আয়োজনটির নানা মুহূর্ত তেমনই একটি, যা সূর্য কিংবা রাতের আঁধার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে যায় না। অমলিন থাকে জীবনের নানা মুহূর্তের সঙ্গে, স্মৃতির ফ্রেমে।

উল্লেখ্য, বিইউপিবিজিএ সম্প্রতি নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। সংগঠনটির ১৯ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি রয়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক নানা কর্মকাণ্ড আয়োজন করে সংগঠনটি। এরই অংশ হিসেবে বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ভবিষ্যতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন সংগঠন সদস্যরা।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০