বিএটির সিএসআর ফান্ডের ২০০ কোটি টাকা লোপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) ২০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটেছে। অডিট আপত্তিতে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন কোম্পানির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স প্রধান শেখ শাবাব আহমেদ। এই ঘটনায় চাকরিচ্যুত হতে পারেন বিএটিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম, বিজনেস কমিউনিকেশন ম্যানেজার ফুয়াদ বিন সাজ্জাদ ও লিগ্যাল অ্যান্ড এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান মুবিনা আসাফ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিএটিবির সিএসআর খাতের ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের বিষয়ে আপত্তি তুলেছে কোম্পানির অডিট বিভাগ। এই অর্থ খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে অডিট বিভাগের কাছে কোনো জবাব দিতে পারেননি কোম্পানির এমডি শেহজাদ মুনিম। পরবর্তী সময় এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স প্রধান শেখ শাবাব আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অডিট বিভাগে জানিয়েছি; বিষয়টি ঊর্ধ্বতন সবাই অবগত। এ ঘটনার পরই চাকরিচ্যুত করা হয় শেখ শাবাব আহমেদকে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, সিএসআর খাতের ২০০ কোটি টাকা নয়-ছয়ের ঘটনায় তোপের মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। যে কোনো সময় তাদের চাকরিচ্যুত করা হতে পারে। অথবা তারাও চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।

সিএসআর কর্মসূচির আড়ালে সারাদেশের কৃষকদের দীর্ঘদিন ধরে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে বহুজাতিক কোম্পানি বিএটিবি। শুধু কোম্পানির তালিকাভুক্ত কয়েকশ চাষির মাঝে ‘দীপ্ত’ প্রকল্পের সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।

২০১৩ সালে পাহাড়ে অন্ধকার দূর করে আলো জ্বালানো হয়েছে বলে কোটি টাকা খরচে বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে বিএটিবি। আইনের ফাঁক গলে এসব বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে কোম্পানির লোগো প্রচার করিয়ে নিচ্ছে।  অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূলত অন্য কোম্পানির চাষিদের আকৃষ্ট করতে এবং পত্রিকায় নিজেদের লোগো ব্যবহার করতেই এসব সোলার বিতরণ করছে বিএটিবি।

বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির চারটি গ্রামের ৫৭৬টি পরিবারকে ‘দীপ্ত’ প্রকল্পের অধীনে সৌরবিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএটিবি। হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে এ প্রকল্পের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে প্রচারণা চালালেও দেয়া হয়েছে শুধু নিজ চাষিদের। এদের মধ্যে অনেক অবস্থাসম্পন্ন কৃষকও রয়েছেন। তামাকচাষিরা জানান, ২০ ওয়াটের এ সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে তিনটি বাতি জ্বালানো সম্ভব।

সূত্র জানিয়েছে, এ ধরনের একটি সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনে বিএটিবি’র খরচ হয়েছে মাত্র ২৫ হাজার টাকা। অথচ বিজ্ঞাপনেই খরচ করেছে কোটি টাকার ওপর।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সাল থেকেই স্থানীয় কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে এ সৌরবিদ্যুৎ দেয়ার জন্য কথাবার্তা চালাতে থাকে বিএটিবি। এ ক্ষেত্রে পাড়ার হেডম্যান, উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানটি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০