বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত: হাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:‘এক দফা’ আন্দোলনে থাকা বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রাখলেও, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া উচিত বলে মনে করছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি এও বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে গেলে তিনিও ভোটে অংশ নিতে চান। বিএনপি সরকারের এক সময়ের পানিসম্পদমন্ত্রী হাফিজের ‘নতুন দল গঠন’ এবং ‘নির্বাচনে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা’ নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার অবসরপ্রাপ্ত এ সেনা কর্মকর্তা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার উচিত। বিএনপি নির্বাচনে গেলে আমি সেই নির্বাচনে অংশ নেব।’

হাফিজ নতুন দল করছেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে দাবি সরকারের মন্ত্রীরা করছেনÑসে বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমি দেখছি…। এর বেশি কিছু এখন বলব না।’

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি-জামায়াত জোট। রাজপথে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে ওই নির্বাচনে প্রথমে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। পরে ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি নতুন জোট ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে তাতে অংশ নেয়। সে নির্বাচনে ভরাডুবির পর ‘আগের রাতে ভোট হয়ে যাওয়ার’ অভিযোগ আনে বিএনপি।

এবার ভোটের আগে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি রাজপথে আন্দোলনে রয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের মধ্যে তাদের সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন পর দেশে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি ফিরিয়ে এনেছে দলটি।

দলটির মহাসচিবসহ কয়েকশ নেতাকর্মী ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তফসিলের প্রস্তুতি নিতে থাকা নির্বাচন কমিশনের সংলাপেও তারা যায়নি।

এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনকে ঘিরে নানা জল্পনা চলছে। বলা হচ্ছে, তিনি ‘দল ছাড়াই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন’।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। রাজনীতি নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা এই মুহূর্তে করছি না। আমি রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখতেছি।’

৭৯ বছর বয়সী হাফিজ উদ্দিন আহমেদ দুই মাস আগে অসুস্থ হয়ে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। পরে সিঙ্গাপুরে গিয়েও চিকিৎসা নেন। তিনি বলেন, ‘এখন আবার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। সে জন্য আবার চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাবে। ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করব।’

একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন ‘জেড’ ফোর্সে ছিলেন হাফিজ উদ্দিন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য তিনি বীর বিক্রম খেতাব পান। সামরিক বাহিনী থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে যুক্ত হন। ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলে হাফিজকে পানিসম্পদমন্ত্রী করেন। এক যুগের বেশি সময় ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাকে কারাগারেও যেতে হয়েছে।

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এক কর্মসূচিতে অংশ নেয়ায় ২০২০ সালে ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বিএনপি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০