নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার পতনের এক দফা দাবি নিয়ে বিএনপির যে হুঁশিয়ারি, তাকে ‘কথার কথা’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি মনে করেন, বিএনপিকে জনগণ ‘পরিত্যাগ করেছে’। তাদের কর্মসূচি সফল হতে পারে না।
ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্ম দিবসে গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি, যার মধ্যে ছিল বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গও।
ঈদের আগে আগে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, আমরা আন্দোলনে আছি, মূলত এক দফার আন্দোলনেই আছি। এটা একেবারে আনুষ্ঠানিকভাবে আসবে। তা খুব শিগগিরই দেখতে পারবেন.. শিগগিরই।’
বিএনপির এই অবস্থান নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক কথা বলা হয়, কার্যত কী হয় সেটি আপনারাও দেখেন। যাদের জনগণ পরিত্যাগ করেছে তারা কীভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করবে সেটা আমার বোধগম্য নয়।’
অবশ্য বিএনপি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ ঘটাতে পারে বলে মনে করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চড়াও হতে পারে, গাড়ি ভাঙচুর করতে পারে। সে সমস্ত ঘটনা তারা পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে।’
‘এ ধরনের ঘটনা ঘটালে তারা যেমন জনবিচ্ছিন্ন হবেন সেটি যেমন সত্যি, তেমনি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষ, তারা সবসময় এটি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে পারে। জনগণ কখনই জ্বালাও-পোড়াও, হত্যা পছন্দ করে না।’
বিএনপি ‘সুপার পাওয়ার’ নিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করছে, একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন একটি মন্তব্যের জবাবে কামাল বলেন, ‘সুপার পাওয়ার কাকে বলে সেটা আমরা বুঝি না। আমরা যাকে সুপার পাওয়ার বলি, সেটা হলো জনগণ। জনগণই হল সুপার পাওয়ার। তাদের ওপর সুপার পাওয়ার আর কারও নেই।’
‘আমরা যেটা মনে করি জনগণকে যদি সঙ্গে না নিয়ে কোনো কিছু হয় তবে সেটা কোনো দিন সফল হবে না। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি, জনগণের শক্তিতেই আমরা চলি।’
‘একটি ঘটনা খুব নাড়া দিয়েছে’ দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া কোরবানির ঈদের ছুটিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে ঈদের পর ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা নাড়া দিয়েছে বলে জানান তিনি।
ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন ছিল, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি সারা বাংলাদেশেই স্বাভাবিক অবস্থা ছিল। কোনো অপ্রীতিকর বা বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ছোটখাটো দুয়েকটি ঘটনা বাদ দিলে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
‘এর মধ্যে একটি ঘটনা আমাদের খুব নাড়া দিয়েছে। ঈদের পরে শনিবার এক পুলিশ কনস্টেবলকে ছিনতাইকারীরা উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেছিল, রক্তক্ষরণে সে ইন্তেকাল করেছে।’
‘আরেকজন সাংবাদিককেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়, সেও ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছিল। এই দুইটি ঘটনা ছাড়া ঢাকায় তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। মোটামুটি সব জায়গায়ই খুব শান্তিপূর্ণভাবে ঈদুল আজহাটা উদযাপিত হয়েছে।’
অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সাত দিনের মধ্যে দুটি ঘটনা ঘটেছে, যেটা অনাকাক্সিক্ষত, যেটা হওয়া উচিত হয়নি। আমাদের কমিশনার কিছুক্ষণ আগে এসেছিলেন। কারও দুর্বলতা থাকলে সেটা তিনি দেখছেন এবং ব্যবস্থা নেবেন।’
মন্ত্রী বলেন, ঈদের ছুটিতে এক কোটির মতো মানুষ ঢাকা ছেড়েছিল। মানুষ নির্বিঘেœ বাড়ি গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করেছে।