প্রতিনিধি, নোয়াখালী : বিএনপিকে ইঙ্গিত করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘যারা অতীতে কিছু দিতে পারেনি, তারা কোনোদিন দিতে পারবে না। তারা করোনার সময় বলেছিল, দুই লাখ লোক না খেয়ে মারা যাবে। কিন্তু একজনও না খেয়ে মারা যায়নি, বরং রিলিফে রিলিফে ভরিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা কিছুদিন আগেও বলেছিল, দুর্ভিক্ষ হবে, কিন্তু হচ্ছে না। অতএব তারা সব সময় মিথ্যা কথাই বলবে। সেদিকে কান না দিয়ে উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করুন।’ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা পাচ্ছেন বলে চাচ্ছেন। যে সরকারের কাছে পাওয়া যায়, সে সরকারের কাছে চাওয়া যায়। এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আপনাদেরও কিছু কাজ আছে। আপনাদের শেখ হাসিনা সরকারকে আবার ক্ষমতায় নিয়ে আসা উচিত। এ নিয়ে আপনাদের কাজ করতে হবে। নোয়াখালী থেকে যদি ছয়টি আসন আপনারা উপহার দিতে পারেন, আর আমার নওগাঁ থেকে যদি ছয়টি আসন দিতে পারি, তাহলে আবারও উন্নয়ন চাইব।’
দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রাখতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এটিকে ৩০ লাখের ওপরে নিয়ে যেতে হবে। আমরা করতে পারব। খাদ্যের কোনো প্রকল্প দাখিল করলে তিনি না করেন না। আপনাদেরও তাকে ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থাটা করতে হবে। সব দলাদলি ও ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে।’
মিল মালিকদের লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা না করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নতুন আইন হয়েছে। আইনটা যেমন সৎ ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই ভালো, তেমনি অসৎ ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই খারাপ। মজুতের বিরুদ্ধে, যারা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাবেন, ট্রাকে পরিবহন করবেনÑসব বিষয়ে ওই আইনে পরিষ্কারভাবে বলা আছে।’
মজুতদারদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘এই মন্ত্রণালয় চালাতে গিয়ে মজুতদারদের কারণে মাঝেমাঝেই ধাক্কা খেয়েছি। চাল আছে, মজুত আছে প্রচুর, অথচ প্রতিদিন বাজারে দাম বাড়ছে। অনেক গ্রুপ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছে। আমরা থামিনি। বড় বড় গ্রুপের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। ধান-চালের ব্যবসাও একটা সেবা। মানুষের পেটের খাবার মজুত করে রেখে, আরেকজনকে ক্ষুধার কষ্ট দিলে আল্লাহর তরফ থেকেও শাস্তি পেতে হবে। অতএব কেউ দয়া করে খাদ্য মজুত করবেন না।’
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন গরুর হাল পাওয়া যায় না। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা হয়েছে। হাজার কোটি নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে সরকার অনেক কম মূল্যে সার দেয়। এটি আপনাদের মনে রাখতে হবে। আগে আমরা ভারত ও চীন থেকে বীজ আমদানি করতাম। ওই বীজ আমদানি করে আমরা ফলন বৃদ্ধির চেষ্টা করতাম। এখন আমাদের কৃষি গবেষকরা নিত্যনতুন ধান বের করছেন এবং ফলনও বেশি হচ্ছে। খরাসহিষ্ণু ধান, লবণসহিষ্ণু ধান, জলাবদ্ধতাসহিষ্ণু ধানসহ বিভিন্ন জাতের ধান আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদান।’