নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি এখন নির্বাচনে আসতে চাইলেও সংবিধান অনুযায়ী আর সেই সুযোগ নেই, এমনকি এই মুহূর্তে আমাদের পক্ষে কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। গতকাল বুধবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি যদি এখন ভোটে আসতে চায় সে সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাছে এরকম সুযোগ আছে তা দেখি না। আপাতত আমরা দেখছি না। কারণ হলো সংবিধানে যেহেতু একটি সময় দেয়া আছে। সে সময়ের পর নির্বাচন করার কোনো উদ্যোগ নির্বাচন কমিশন কখনও নেবে না। আর আমরা যেটা আগেই বলেছিলাম,
আপনাদের মাধ্যমে মনোনয়ন দেয়ার যে শেষ তারিখ ছিল, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে যদি তারা আসে তখন সেটা রি-শিডিউল করতে পারব। কিন্তু সে সময়টা এখন অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে আমাদের পক্ষে কিছু করার নেই।
যদি রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছায় তবে কি সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়, তখন তারা কীভাবে একমত হলো, সংবিধানের মধ্য থেকে সেটা সম্ভব কি না, তারা যদি আমাদের বোঝাতে সক্ষম হয়, তখন দেখা যাবে।
ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ১৪টি জেলা ঘুরে এসেছেন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় ভোটারদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। কোনো দল ভোটে না এসে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের নিষেধ করলেও কোনো ধরনের নাশকতা, উসকানি দিলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা নেই। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা সব জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখেছেন। সুন্দর সুষ্ঠু, পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করা যেন সম্ভব হয়, সে বিষয়টি তারা আশ্বস্ত করেছে। তাদের পদক্ষেপের পাশাপাশি ইসির পক্ষ থেকে যেসব পরামর্শ দেয়া দরকার, তা দিয়েছি।’
প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর উৎসবের আমেজে প্রচারণা ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখেছেন বলে জানান তিনি।
যাওয়া-আসার পথে ও নির্বাচন এলাকার পরিস্থিতি তুলে ধরে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোটারদের মধ্যে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনাই দেখেছি। যারা প্রার্থী রয়েছেন, প্রতীক পেয়ে বেশ মিছিল, সভা করছেন। বেশ আনন্দেই আছেন। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। পুলিশ ও প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, কোথাও কোনো এমন থ্রেট নেই যে, নির্বাচনে সমস্যা হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস বুঝতে হবে এটা গণতান্ত্রিক দেশ। স্বাধীনভাবে ভোটে অংশ নেয়ার যেমন অধিকার রয়েছে, অংশ না নেয়ারও অধিকার রয়েছে। কোনো দল যদি অংশ না নেয়, সেটা তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছা, কৌশল। এতে সমস্যা নেই। একই সঙ্গে তারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধও করতে পারে, তাতেও সমস্যা নেই। কিন্তু সেটা শান্তিপূর্ণভাবে বলতে হবে। কোনো নাশকতা, উসকানি, বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। এটা করলে নির্বাচনি আইন বিধি অনুযায়ী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ যাতে না করতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। আমরা কঠোরভাবে দেখব।’
বিএনপি ও সমমনাদের ভোট প্রত্যাখ্যান ও নাশকতার প্রচেষ্টা, ভোটারদের মাঝে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সহিংসতা একেবারেই দুয়েকটা ক্ষেত্রে বলা যায়। শান্তিশৃঙ্খলার সঙ্গে এটার মাত্রা তুলনা করলে একেবারেই নগণ্য। যেটা করছে, খুবই বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনা ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন অত্যন্ত তৎপর। কোনো নাশকতা ঘটার চেষ্টা করছে কি না, সংগঠিত করার চেষ্টা করছে কি না, তারা অত্যন্ত সজাগ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোথায় এ ধরনের নাশকতামূলক কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে। ৩০০ আসনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাড়া পড়েছে, যেখানে আনন্দ-উৎসবের অবস্থা হয়েছে, সেখানে এগুলো কোনো প্রভাব ফেলবে বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচন যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবে হবে।’