নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদের দুটি আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রচারণায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী। গতকাল সকালে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর গুণ্ডা বাহিনী। নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে গত বৃহস্পতিবার ধানের শীষের প্রার্থীর প্রস্তুতি সভায় আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আত্রাই থানা বিএনপির আহ্বায়ক মোশাররফ এবং যুগ্ম আহ্বায়ক জাপানসহ অনেক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। আসন্ন উপনির্বাচনগুলোয় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আলামত দেখা যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে যতই বাধা দেওয়া হোক সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণ তা সব শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবে।’
এসব সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিও জানান রিজভী। ২ এপ্রিল সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর মৃত্যুতে শূন্য পাবনা-৪ আসনে শনিবার ভোট হবে। আসনটিতে ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব এবং নৌকার প্রার্থী নুরুজ্জামান বিশ্বাস।
এদিকে ১৭ অক্টোবর নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন শেখ মো. রেজাউল করীম। রুহুল কবির রিজভী বলেল, “স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাকারী ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তমকে নিয়ে বহুমাত্রিকর কাল্পনিক, উদ্ভট আর বিকৃত মিথ্যাচার করেই আওয়ামী লীগ ক্ষান্ত হয়নি, এখন তাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কিছু পদলেহী অর্বাচীন অসুস্থ লোক ইতিহাস বিকৃত করার প্রক্রিয়ায় জিয়াউর রহমানকে খাটো করার অপচেষ্টায় নিরন্তর কাজ করছে। মান্নান হীরা নামে এক ব্যক্তি নিজেকে আওয়ামী লীগের নেক নজর পাওয়ার জন্য ‘ইনডেমনিটি’ নামে তথাকথিত একটি বিকৃত ইতিহাসের চটি নাটক লিখে জয় বাংলা ব্যানারে সারা দেশে মঞ্চায়ন করে বেড়াচ্ছে গত এক বছর ধরে।”
তিনি বলেন, ‘এই নাটক নির্মাতাদের কত বড় স্পর্ধা যে, এ দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা শহীদ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অসত্য ইতিহাস রচনা করে তা নাটক আকারে বিকৃতভাবে মঞ্চস্থ করেছে। এই কথিত পথ নাটকটি কাল ২৬ সেপ্টেম্বর নিশিরাতের এক সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন টিভিতে প্রচার করা হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই, এই ইতিহাস বিকৃতি ও তথ্য সন্ত্রাসমূলক নাটক প্রচারের অপচেষ্টা চালিয়ে গণশত্রু হবেন না। এই নাটকের রচয়িতা, পরিচালক, নির্দেশক, অভিনেতা-কলাকুশলীদের জনগণ মনে রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃত করে রণাঙ্গনের বীর সেক্টার কমান্ডার শহীদ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও তার চরিত্র হননের অপপ্রয়াসের জন্য আপামর জনগণ দারুণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার মানেই রণাঙ্গনের সব মুক্তিযোদ্ধাকেই অপমান করা। এই অর্বাচীনরা হলো গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ব্যবসা করা ফড়িয়া ও দালালদের সহযোগী।’
রিজভী বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, এই দিন দিন না, আরও দিন আছে। দেশের জনগণই এর উপযুক্ত জবাব দেবে। বিকারগ্রস্ত ইনডেমনিটি নামে চরিত্রহননকারী নাটকের নির্মাতাদের এমন কর্মকাণ্ডে আমি তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি এবং এর সঙ্গে জড়িত কিংবা প্রচার করবেন জনগণ তাদের ক্ষমা করবেন না। নাটক রচয়িতাদের বলছি, বিএনপি নিরালম্ব নয়, অপপ্রচারকারী বিকৃতমনা সরকারের আনুকূল্য পাওয়া কিছু সাংস্কৃতিক কর্মীরাও জনগণের রোষ থেকে রেহাই পাবে না।’
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সৈয়দ মো. শামসুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মনির, জি-নাইনের খন্দকার আহাদ আহমেদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, কৃষক দলের মেহেদি হাসান পলাশ উপস্থিত ছিলেন।
