নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপিকে আন্দোলনে ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন, তারা খুনের পরিকল্পনা করছে। অস্ত্র জোগাড় করছে। বোমার কারখানা করছে। তাদের ধূলিসাৎ করে দিতে হবে। আগামী নির্বাচন সংবিধানসম্মতভাবে শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। একচুলও ছাড় দেয়া হবে না। বিএনপি মাঠে নামলে প্যাঁদানি দিয়ে বুড়িগঙ্গা পার করা হবে।
শেখ রাসেলের ৬০তম জš§দিন উপলক্ষে গতকাল বুধবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে এ কথা বলেন বক্তারা।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।
শাজাহান খান বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের জন্য নাকি পিটার হাস অবতার হিসেবে অবতরণ করেছেন। তাদের জনগণের প্রতি বিশ্বাস নেই। পাকিস্তান আর যুক্তরাষ্ট্রের ওপরে নির্ভর করছে। আমরা জনগণে বিশ্বাসী। এ জনগণের সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ যাত্রা অব্যাহত রাখব। ঢাকাকে কাউকে অবরোধ করতে দেয়া হবে না।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, কিছু দূরে তারা (বিএনপি) সভায় করছে। এ সভা আগামী দিনে খুন করার পরিকল্পনার সভা। তারা অস্ত্র জোগাড় করছে। বোমা তৈরির কারখানা করছে। তারা নাকি রাজপথ দখল করবে। পূজার পরে আমরাও মাঠে নামব। তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর মাঠে নামলে এমন প্যাঁদানি দেবে, বুড়িগঙ্গা ছেড়ে যেতে হবে।
অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখানে সমাবেশ করছি। আধা কিলোমিটার দূরে সমাবেশ করছে তারা। একপাশে মুক্তিযুদ্ধের শক্তি, আরেক পাশে বিরুদ্ধ শক্তি। এ হচ্ছে ব্যবধান। ওই খুনিদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়, কোনো সংলাপ নয়, কোনো সমঝোতা নয়। সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে, এক চুলও সরার সুযোগ নেই। এরা অস্ত্র সংগ্রহ করছে। আগামীতে একটা নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়। কিন্তু আপনারা সতর্ক থাকবেন, রাজপথ আমাদের দখলে থাকবে।
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, কুকুরের লেজ ধরে রাখলে সোজা থাকে, ছেড়ে দিলে যেই সেই। বিএনপি-জামায়াতের একই অবস্থা। তাদের যতই ছেড়ে দিয়েছি, তারা আগের অবস্থায় ফিরে যায়। তাদের ছাড় দেয়া যাবে না। তাদের বাংলার মাটি থেকে ধূলিসাৎ করতে হবে। আমরা মাঠ ছাড়ব না। আবারও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে ঘরে ফিরব।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, শেখ রাসেলের জš§দিনে তাকে স্মরণ করে আমরা কান্নায় ভেঙে পড়ছি। আর খুনির দলেরা বাগাড়ম্বর করছে। এটিই স্বাভাবিক। ওরা খুনি জিয়ার দল, খুন তারেকের অনুসারী। ওরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সাবধান দেশবাসী, সাবধান। সতর্ক হোন দেশবাসী। শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ ওদের ভালো লাগে না। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ভালো লাগে না। কৃষক তাদের সঠিক মূল্য পাচ্ছে, ওদের ভালো লাগে না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে তিনি বলেন, অবরোধ করবেন, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবেন, তাহলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।
আব্দুর রহমান বলেন, শেখ রাসেলের রক্তে যাদের হাত লালে লাল হয়েছিল, সেই অশুভ শক্তি গোটা বাংলাদেশে অশান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চিন্তা করে নতুন করে ১৫ আগস্টের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে চায়। সেই দিন আর আজ এক নয়। রাসেলের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। ওই শক্তিকে বাংলার মাটিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেব না।
তিনি বলেন, ওরা পূজার পরে ১০ লাখ লোক নিয়ে ঢাকার ঘেরাও করার কর্মসূচি দেয়ার পরিকল্পনা করছে। ওরা যেদিন কর্মসূচি দেবে, সাড়ে তিন হাত লাঠি নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত আছেন কি না, দেখিয়ে দেন। এসময় নেতাকর্মীরা হ্যাঁ সূচক সম্মতি দেন।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, তারা (বিএনপি) দেশে পুতুল সরকার বসাতে চায়। এখন ব্যানার দেখানো আর সেøাগানের সময় নয়। সময় হলো তৃণমূল পর্যায়ে অবস্থান নেয়ার। পাড়া-মহল্লায় অবস্থান নিতে হবে। জাতির জনকের ৭ মার্চের আহ্বানের মতো আহ্বান জানাই, আমাদের ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। আমরা যদি ঘরে ঘরে দুর্গ গড়তে পারি, পাড়া-মহল্লায় অবস্থান নিতে পারি, তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। আমাদের সঙ্গে জনগণ আছে, জনগণ আমাদের শক্তি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেনÑঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রহমান, সাদেক খান, এসএ মান্নান কচি, হুমায়ুন কবির, নূরুল আমিন রুহুল, আব্দুল কাদের খান, কাজী মোরশেদ কামাল, মাহবুবুর রহমান হিরণ, দিলীপ রায় ও আজিজুল হক রানা।