বিএসইসির নতুন নির্দেশনায় ফিরল সূচক

মো. আসাদুজ্জামান নূর: আট কার্যদিবস পর গতকাল সূচকের উত্থানে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। বেশিরভাগ সিকিউরিটিজের দর বাড়ার সঙ্গে টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণও সামান্য বেড়েছে। বাজারের এই ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে কাজ করেছে বিএসইসির একটি আদেশ।

আগের দিনের ১৮২ পয়েন্ট পতনের ধারাবাহিকতায় লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই সূচক থেকে ১৩৭ পয়েন্ট হাওয়া হয়ে যায়। এতে আতঙ্ক আরও জেঁকে বসে। কিন্তু এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক আদেশে মুহূর্তে দেখা দেয় উল্টো চিত্র।

তালিকাভুক্ত কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশ দিয়ে গঠন করা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের আদেশ দেয়া হয়। এরপর শেয়ারগুলো হারিয়ে ফেলা দর ফিরে পেতে থাকে। দিন শেষে ২১৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে। বিপরীতে কমে ১১৬টির দর। ৪৫টি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পারে। এরই সঙ্গে সূচকে যোগ হয় পয়েন্ট। শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট বেড়ে প্রধান সূচক অবস্থান করছে ছয় হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে। ৪ পয়েন্ট বেড়েছে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস। তবে শূন্য দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমেছে ডিএস৩০ সূচক।

সূচক যতটা বেড়েছে, তার অর্ধেক যোগ করেছে লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট। বহুজাতিক কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি তিতাস গ্যাসের শেয়ারদরে যোগ হয়েছে ৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট, কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট। বেক্সিমকো ফার্মা ৩ দশমিক ৪৫, পাওয়ারগ্রিড ৩ দশমিক ৪২, বেক্সিমকো লিমিটেড ৩ দশমিক ০৪, রবি ২ দশমিক ৮, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ২ দশমিক ৫২, জিপিএইচ ইস্পাত ২ দশমিক ৪৫, ওরিয়ন ফার্মা ১ দশমিক ৮৭ ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে এ ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ৩৫ পয়েন্ট।

বিপরীতে রেনাটার শেয়ারের ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ দরপতনের কারণে সূচক পড়েছে ৯ দশমিক ০৪ পয়েন্ট। এ কোম্পানিটিই সূচক সবচেয়ে বেশি নিচের দিকে টেনে নামিয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ারদর ক্রমেই কমছে। পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ালেও এই কোম্পানিটি আরও ১ দশমিক ০৬ শতাংশ দর হারিয়েছে। দিন শেষে শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৫৬৭ টাকা ২০ পয়সা, যা কয়েকদিন আগেও ছিল ৭০০ টাকার কাছাকাছি। এই দরপতনের কারণে সূচক কমেছে ৮ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারদর ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৮ দশমিক ৯২ পয়েন্ট। বার্জার পেইন্টস, স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, ওয়ালটন, সোনালী পেপার, রেকিট বেনকিজার ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম ছিল সবচেয়ে বেশি সূচক কমানো কোম্পানির তালিকায়। সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৪৫ দশমিক ০৯ পয়েন্ট। পুঁজিবাজারে বড় উত্থান না হলেও ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ধসের মধ্যে এটিই এক বড় স্বস্তির কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

এদিকে সূচক বাড়লেও লেনদেনে গতি ফেরেনি। যদিও আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কিছুটা বেশি হয়েছে। গতকাল দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৭৪৬ কোটি ৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল ৭৪০ কোটি ২৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এ নিয়ে টানা ৮ কার্যদিবস এক হাজার কোটি টাকার কম শেয়ার হাতবদল হলো।

লেনদেনে সবচেয়ে বেশি হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। লেনদেনের ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল খাতটির দখলে। পরের অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতে লেনদেন হয় ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর রয়েছে যথাক্রমে বস্ত্র ১২ দশমিক ৩, প্রকৌশল ৯, ব্যাংক ৮ দশমিক ৭, খাদ্য ৮ দশমিক ৪ ও আইটি খাতে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশের নিচে ছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০