নিজস্ব প্রতিবেদক : শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলজি বিভাগের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী চিকিৎসক।
ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক একই প্রতিষ্ঠানের মনোরোগ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। আর অভিযুক্ত চিকিৎসক হলেন বিএসএমএমইউয়ের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সবুজ (৫০)। বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন ওই নারী চিকিৎসক।
গতকাল শুক্রবার বিকালে শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ওই নারী চিকিৎসক শ্লীলতাহানি, মারধর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেছেন বিএসএমএমইউয়ের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সবুজের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি।
মামলার অভিযোগে ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক জানান, বিএসএমএমইউয়ের মনোরোগ বিভাগে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। হাসপাতালে কর্মরত থাকার সময় বিএসএমএমইউয়ের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সবুজ তাকে তার রুমে বিভিন্ন সময়ে ডাকেন এবং একটি হাসপাতাল নির্মাণ করবেন বলে জানান। হাসপাতালের অংশীদার হতে ভুক্তভোগীকে অনুরোধ করেন শহীদুল্লাহ সবুজ। এছাড়া শহীদুল্লাহ সবুজ এভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীকে তার কক্ষে ডেকে এনে অশ্লীল কুপ্রস্তাব দেন।
অভিযুক্ত চিকিৎসক জ্যেষ্ঠ হওয়ায় চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কাউকে কিছু বলেননি। এর পরও অভিযুক্ত চিকিৎসক যখন হাসপতালে নিজ কক্ষে একা থাকতেন, তখন নানা কাজের অজুহাতে ভুক্তভোগীকে আসার জন্য ডাকতেন। তখন তার ডাকে সাড়া না দিয়ে ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক অভিযুক্ত শহীদুল্লাহ সবুজের কক্ষে যাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন।
এজাহারে ভুক্তভোগী আরও উল্লেখ করেন, এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন অভিযুক্ত চিকিৎসক তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসককে জড়িয়ে ধরে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে নেন। এই ছবিকে পুঁজি করে ভুক্তভোগীকে অভিযুক্ত শহীদুল্লাহ সবুজ বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী অভিযুক্ত ডা. শহীদুল্লাহ সবুজকে হাসপাতালের অংশীদারিত্ব বাবদ দুই দফায় ২০ লাখ টাকা দেন।
সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি হাসপাতালের বি-ব্লকের অ্যালামনাই রুমে অভিযুক্ত শহীদুল্লাহ সবুজ ওই নারী চিকিৎসককে কুপ্রস্তাব দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় জোরপূর্বক ভুক্তভোগীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন তিনি। নিজেকে বাঁচাতে চিৎকার করলে ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন অভিযুক্ত শহীদুল্লাহ সবুজ।
সে সময় শহীদুল্লাহ সবুজ ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসককে জড়িয়ে ধরার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং পরিবারের লোকজনের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। বিষয়টি নিয়ে মানসম্মানের ভয়ে তাৎক্ষণিকভাবে চুপ থাকেন ভুক্তভোগী। এরপরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে তার পরিবারের কাছে অপ্রচার চালান।