নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশব্যাপী বাধ্যতামূলকভাবে বিএসটিআই’র লোগোযুক্ত বাটখারা ব্যবহার এবং দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য মিটার পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। এর পর থেকে বিএসটিআই’র লোগোবিহীন বাটখারা কিংবা মিটারের পরিবর্তে অন্য কোনো পরিমাপক ব্যবহার করলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) ৩১তম কাউন্সিল সভায় গতকাল মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
দেশব্যাপী বিএসটিআই’র মাধ্যমে পণ্য ও সেবার মান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় বিএসটিআইকে আধুনিক ও শক্তিশালী করতে চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি, জনবল বৃদ্ধি, নতুন প্রকল্প গ্রহণসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ওজন ও পরিমাপে কারচুপি প্রতিরোধে ডিজিটাল স্কেল চালুর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ধরনের পরিমাপক ব্যবহারে ব্যবসায়ী মহলে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এফবিসিসিআই’র সহায়তায় দেশব্যাপী চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএসটিআই’র সরবরাহ করা কনটেন্ট অনুযায়ী টেলিভিশন কমার্শিয়াল (টিভিসি) তৈরি করে তা বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে জানানো হয়, সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে সরবরাহ করা গ্যাসের পরিমাপের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য বিএসটিআই ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পের আওতায় সাতটি সিএনজি মাস্টার মিটার ক্রয় করেছে। এসব মিটারের মাধ্যমে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে ফ্লো-কন্ট্রোলিং ডিভাইস টেম্পারিং করে ভোক্তা সাধারণকে ঠকানো হচ্ছে কি না তা সরেজমিনে পরীক্ষা করা হবে। একই সঙ্গে তিতাস গ্যাস কোম্পানি থেকে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো সঠিক পরিমাপে গ্যাস পাচ্ছে কি না তাও তদারকি করা হবে।
জননিরাপত্তা এবং ভোক্তাসাধারণের জন্য মানসম্মত পণ্যের নিশ্চয়তা দিতে ২৯টি নতুন পণ্য বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) লাইসেন্সের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া বেভারেজের নামে এনার্জি ড্রিংকস উৎপাদন ও আমদানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যেসব প্রতিষ্ঠান এ ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দ্রুত উকিল নোটিশ প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় শিল্পমন্ত্রী বিএসটিআইকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের গুণগত মানের সঙ্গে জনগণের জীবনের সুরক্ষার বিষয়টি জড়িত। এ বিবেচনায় মান নির্ধারণ ও পরীক্ষণের ক্ষেত্রে বিএসটিআই কর্মকর্তাদের নৈতিক মান আরও উন্নত হতে হবে। তিনি ব্যবসায়ী সমাজের সহায়তায় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত
বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন। তিনি তৃণমূল পর্যায়ে ভোক্তাসাধারণের জন্য মানসম্মত পণ্য ও সেবা নিশ্চিত করতে শিল্প কারখানায় আকস্মিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেন।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুষেণ চন্দ্র দাস, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক মো. সাইফুল হাসিবসহ শিল্প, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, বাণিজ্য, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, স্বরাষ্ট্র, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রধান তথ্য অফিসার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, অর্থ বিভাগ, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রফতানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এফবিসিসিআই, এমসিসিআই ডিসিসিআই, বিসিআই, ক্যাব,
বুয়েটসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Add Comment