অ্যালোপ্যাথিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসাপদ্ধতি দ্ব্যর্থহীনভাবে এ কথা স্বীকার করা যায়। অথচ অনেকে এ চিকিৎসা নিতে অনীহা প্রকাশ করেন। কেন? তারা আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি, অসটিওপ্যাথি, ছিরোপ্যাথি, ন্যাচরোপ্যাথি, ইউনানি, আকুপাংচার, ন্যাচরোভেদিক, বায়োকেমিক, বনৌষধি, নিউট্রিশনাল থেরাপি প্রভৃতির প্রতি আকৃষ্ট। এর উত্তর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের (এনএলএম) অনলাইনে স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান মেডলাইন প্লাস ও ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
মনস্তাস্তি¡ক
অনেক রোগী মনে করেন, বিকল্প পদ্ধতিতে যারা চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন, তারা রোগীদের প্রতি বেশ সদয়। চিকিৎসকরা রোগীদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন। রোগীর সমস্যা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। শুধু রোগই নয়, তারা সম্পূর্ণ রোগীরই চিকিৎসা করে থাকেন। অর্থাৎ, তারা একজন রোগীর শারীরিক, মানসিক, আবেগ ও আত্মিক স্বাস্থ্য প্রভৃতিকে গুরুত্ব দেন।
প্রযুক্তিগত দূরত্ব
বেশিরভাগ রোগী রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে সহ নানা ধরনের অনুসন্ধানী পরীক্ষাকে ঝামেলাময় মনে করেন। অনেকে ভয়ও পান। ফলে ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে
তৈরি হয় দূরত্ব। অপরদিকে বিকল্পধারায় প্রচলিত ম্যাসাজ, হস্তচালনা, চাপ প্রয়োগ প্রভৃতি রোগীরা পছন্দ করেন। তারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পান।
অভিযোগ
অনেক রোগীর মতে, অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকরা রোগীদের সময় দেন না বললে চলে। তারা বিশদভাবে রোগটি নিয়ে আলোচনা করেন না। রোগীর সব কথা শুনতে চান না। কিন্তু বিকল্পধারার ডাক্তাররা মন দিয়ে রোগীর সব কথা শোনেন। তুলনামূলক বেশি সময় ব্যয় করেন রোগীর পেছনে। সংগত কারণে রোগীর সঙ্গে ডাক্তারের দূরত্ব কমে আসে। বিষয়টি চিকিৎসার জন্য ইতিবাচক বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কোনো সাইড ইফেক্ট নেই এমনটাই দাবি করে থাকে সব চিকিৎসাপদ্ধতি। এক গবেষণায় দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ায় তৃতীয় মৃত্যুর কারণ হাসপাতাল। দেশটির সংসদে ১৯৯৫ সালের ১৪ জুন জানানো হয়, ওই বছর প্রায় ১৮ হাজার মানুষ হাসপাতালে মারা গেছে। সংখ্যাটি কমেনি বরং বেড়েই চলেছে। আমেরিকায় প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি মানুষ হাসপাতালে মারাত্মকভাবে জীবাণুবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতি এদিক থেকে অনেক
প্রশংসা কুড়িয়েছে।
পরিচিতি
অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় প্রচুর ওষুধ গ্রহণ করতে হয় এমনটা বলে থাকেন অনেকে। এভাবে চলতে চলতে ওষুধের প্রতি তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এজন্য অনেকে বিকল্প পদ্ধতির ওপর নির্ভর করেন। বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতি ঘিরে নেতিবাচক প্রচারও চালানো হয় এমন দাবি অনেকের। বিষয়টি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বলে মত দিয়েছেন তারা।
সাধারণ কিছু বিষয়
অনেক বিকল্পধারার চিকিৎসা করানো হয় ঘরোয়া পদ্ধতিতে। ওষুধের পরিবর্তে রোগীকে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। মানসিক চাপ কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয় এবং এ বিষয়ে চর্চার কলাকৌশল শেখানো হয়, যাতে আজীবন নিরোগ থাকা যায়।
রতন কুমার দাস