বিক্রয় চাপে ব্যাপক পতন, লেনদেনের ৫০ শতাংশই চার খাতের

মো. আসাদুজ্জামান নূর: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল বড় পতন দেখা গেছে পুঁজিবাজারে। গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সিংহভাগ সিকিউরিটিজের দরপতনের ফলে সূচক কমেছে এক দশমিক ২৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনও।মোট লেনদেনের ৫০ ভাগই মাত্র চারটি খাতের।

গতকালের লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রচণ্ড বিক্রয় চাপ বাজারে পতন নিয়ে এসেছে। লেনদেনের শুরু থেকেই বাজারে ক্রেতাদের চেয়ে বিক্রেতারা বেশি সক্রিয় ছিলেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সেটি আরও প্রকট হয়েছে। ১৯টির মধ্যে ১৬টি খাতই লোকসানের তালিকায় ছিল, এর বিপরীতে মাত্র তিনটি খাত ছিল মুনাফার তালিকায়।

এরই সঙ্গে আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেনও কমেছে। রোববার লেনদেন হয়েছে ৭৮৬ কোটি টাকা। এর আগে গত বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৮০৭ কোটি টাকা, যা আট মাসের মধ্যে সর্বনিন্ম ছিল।

গতকালের লেনদেনের অর্ধেকই মাত্র চারটি খাতের। খাতগুলো হলোÑব্যাংক, সাধারণ বিমা, বিবিধ এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত। বরাবরের মতোই লেনদেনের শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাত। যদিও এ খাতে ব্যাপক দরপতন ঘটতে দেখা গেছে। ১২৫ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া ব্যাংক খাতের অবদান দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ খাতের ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর হ্রাস পায়। এর বিপরীতে দুটি করে প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়ে ও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা যায়। আগের কার্যদিবস বুধবারে খাতটির অবদান ছিল ১২ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

গতকাল লেনদেনে অংশ নেয়া বিমা খাতের সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। ফলে আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেনে বেড়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে খাতটি। বুধবারে এ খাতের লেনদেন ছিল ৩২ কোটি তিন লাখ টাকা। সেটি বেড়ে গতকাল লেনদেন হয়েছে ১০১ কোটি ২০ লাখ টাকার। ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের ৩৯টির কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে কমতে দেখা গেছে। বুধবারে এ খাতের অবদান ছিল ১৯ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ। গতকাল সেটি কমে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গতকাল আটটি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাসের বিপরীতে বেড়েছে তিনটির ও অপরিবর্তিত ছিল মাত্র দুটির।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২৩টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। পাঁচটির দর বাড়ার সঙ্গে দর ধরে রাখতে পেরেছে মাত্র তিনটি কোম্পানি। আগের কার্যদিবসে ১৩ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের অবদান গতকাল দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশে।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা খাদ্য খাতের সাত দশমিক ১৮ শতাংশ থেকে কমে গতকাল ছয় দশমিক ৯৪ শতাংশে দাঁড়ায়। এ খাতের ১৪টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাসের বিপরীতে বাড়তে দেখা গেছে ছয়টির। অন্যদিকে বস্ত্র খাতের ছয় দশমিক ১০ শতাংশ ও প্রকৌশল পাঁচ দশমিক ৯৮ শতাংশ ছাড়া সব খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশের নিচেই ছিল।

রোববার দরপতন হয়েছে ২৬৬ সিকিউরিটিজের। এর বিপরীতে শেয়ারদর বেড়েছে ৮৭টির ও দর ধরে রাখতে পেরেছে ২৫টি কোম্পানি। সিংহভাগ কোম্পানির দরপতনের কারণে সূচক কমেছে ৮৪ পয়েন্ট। বুধবার লেনদেনের শুরুতে ইতিবাচক ছিল সূচক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বিক্রির চাপে পতন শুরু হয়।

এদিন সূচকের পতনে ব্যাংক, বস্ত্র, প্রকৌশলের মতো প্রধান খাতগুলোয় ব্যাপক দরপতন হয়েছে। ফলে সূচকে এর প্রভাব পড়েছে। সূচক পতনে এদিন সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি), যার এক দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ারের দরপতনে সূচক কমেছে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর টেলিকম খাত রবির শেয়ারদর দুই দশমিক ৩৭ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে সাত দশমিক ৮৫ শতাংশ। এছাড়া স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, লাফার্জহোলসিম, আইসিবি, বেক্সিমকো ফার্মাসহ আটটি কোম্পানির শেয়ারের দর পতনে সূচক কমেছে ২৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০