Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 3:39 am

বিক্রির চাপে বেশির ভাগ খাতে পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিক্রির চাপের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার লেনদেন হয়েছে। এদিন ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত এবং বিমা খাতের শেয়ারসহ অধিকাংশ খাতের শেয়ারের দাম কমেছে। এতে করে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১২ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। বাজারসংশ্লিষ্টরা গতকালের পতনকে পুঁজিবাজারে মূল্য সংশোধন বলে অভিহিত করছেন। তারা বলছেন, উত্থানের পর পতন এটা পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক নিয়ম, এতে বিচলিত হওয়ার কিছুই নেই।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল জীবন বিমা খাতের নয়টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, যা শতাংশের হিসাবে ৫৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এরপর সাধারণ বিমা খাতের লেনদেন হওয়া ২৩ দশমিক ৮১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের যেসব কোম্পানির লেনদেন হয়েছে, এর মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারই অবিক্রীত থেকে যায়। দাম  বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮১ শতাংশ কোম্পানি। এর পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারদর। এ খাতের চারটি কোম্পানি শেয়ারদর বেড়েছে। গতকাল টেলিকমিউনিকেশন, সিরামিক ও আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এদিকে গতকাল বিক্রির চাপ থাকায় প্রযুক্তি খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। এ খাতের ৯০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। শেয়ারদর কমায় দ্বিতীয় স্থানে কাগজ ও মুদ্রণ খাত খাত। খাতটির ৮৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এরপর ৭৩ দশমিক ৮২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল বিমা খাত।

অন্যদিকে গতকাল সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতেই। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা জীবন বিমা খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ লেনদেন হওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।

ডিএসইর তথ্য মতে, রোববার ডিএসইতে ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের ১০ কোটি ২ লাখ ৪০ হাজার ৭৫৬টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডের হাত বদল হয়েছে। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৫৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

এদিন ডিএসইতে ৩৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১১৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১২ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৯ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সোনালী পেপারের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রয়েল টিউলিপ সি পার্লের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে ছিলÑএমারাল্ড অয়েল, ডেল্টা লাইফ, সোনালী আঁশ, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, দেশবন্ধু পলিমার এবং ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার।

অন্যদিকে, সিএসইর প্রধান সূচক ৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৮৮ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৩৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ৫০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির। দিনশেষে সিএসইতে ৫ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৭৬৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৯ টাকার।