নিজস্ব প্রতিবেদকঃদেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কমে হাজার কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও শেয়ার কেনার চাপ বেশি ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারে। এতে খাতটির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এদিন বিনিয়োগকারীরা বিমুখ ছিলেন বিমা খাতের শেয়ারে। এতে আলোচ্য খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। মুনাফা সংগ্রহে বিক্রির চাপে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ থাকার পরও খাতটিতে পতন হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এর আগে কয়েকদিন শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সেই মুনাফা সংগ্রহে এ বিক্রির চাপ ছিল বলে জানা গেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ১টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে; ১টির দর কমেছে এবং বাকিগুলোর দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিরামিক খাতের শেয়ার। খাতটিতে দর বেড়েছে ১ দশমিক ২০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় বিমা খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। পরের স্থানে থাকা আইটি খাতে শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। সিমেন্ট খাতে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৪ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হওয়া আইটি খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
ডিএসইর তথ্য মতে, বাজারটিতে ৩৫৪ প্রতিষ্ঠানের মোট ১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫৭ হাজার ২৪৪ শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩০ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৬৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৪টির, কমেছে ১১৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দাম। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই ৩০ সূচক ১ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ২০ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে ২০২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ৭৪টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৬টির দাম। দিনশেষে সিএসইতে ২১ কোটি ৫৫ লাখ ৮ হাজার ৭৮৮ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২১ কোটি ৬২ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭৩ টাকার শেয়ার।