Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:04 am

বিক্রির তথ্য গোপন করে সিসাবার ‘দি মিরাজ’-এর ভ্যাট ফাঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের রেস্টুরেন্ট কাম সিসাবার ‘দি মিরাজ’। প্রতিষ্ঠানটির রেস্টুরেন্ট ও সিসাবার রয়েছে। খাবার ও মাদক সিসা বিক্রি করে থাকে, যাতে ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট নিলেও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয় না। বিপুল পরিমাণ বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ফলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা করা হয়েছে। গতকাল এ মামলা করা হয়। ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মহাপরিচালক জানান, রেস্টুরেন্ট কাম সিসাবার দি মিরাজ ৯ কোটি ৩৩ কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে, যার বিপরীতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকা। অনুসন্ধান শেষে আজ (গতকাল) মামলা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের অধীনে নিবন্ধিত। প্রতিষ্ঠানটির মূসক নিবন্ধন অনুযায়ী ব্যবসায়িক নাম ‘দি ফ্রেন্ডস হাউস লিমিটেড’।

তিনি জানান, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ১২ নভেম্বর গুলশানের ৩নং সড়কের বাড়ি নং-৯/এ তে অবস্থিত দি মিরাজ সিসাবারে অভিযান পরিচালনা করে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ ও সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন।

অভিযানে গোয়েন্দারা দেখতে পান, রেস্টুরেন্টের আড়ালে তারা সিসাবার পরিচালনা করছে। কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় সিসাবারের প্রাঙ্গণ থেকে ১৫ কেজি সিসা এবং সিসা পরিবেশনের সামগ্রী আটক করা হয়। এছাড়া গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক দলিলাদিও জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও দলিলাদির ভিত্তিতে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত শুধু বিক্রির ওপর এক কোটি ৪০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করা হয়। ভ্যাট আইন অনুসারে, এই ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের ওপর মাসভিত্তিক দুই শতাংশ হারে ৯৮ লাখ টাকা সুদ প্রযোজ্য।

এই সময়ে তথ্য অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, সিসাবারটি বিভিন্ন সেবা ক্রয়ের ওপর আট লাখ ৪০ হাজার টাকা উৎসে ভ্যাট ফাঁকির সঙ্গে জড়িত। এর ওপর মাসভিত্তিক দুই শতাংশ হারে সুদ সাত লাখ ৮৮ হাজার টাকা প্রযোজ্য হবে। দি মিরাজ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিক্রয় এবং উৎসে কর্তন বাবদ সর্বমোট এক কোটি ৪৮ লাখ টাকা মূসক ফাঁকি উদ্ঘাটন করা হয়। এই ফাঁকি দেয়া মূসকের ওপর সুদ বাবদ মোট এক কোটি ছয় লাখ টাকা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি সর্বমোট দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির সঙ্গে জড়িত। আটক সিসা ও সিসাসামগ্রী ক্রয়ের বৈধ উৎস দেখাতে পারেনি সিসাবার কর্তৃপক্ষ। আইন অনুসারে এগুলো রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।