লালমনিরহাটে ব্রকলি আবাদ

বিঘায় লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা

Broccoli fresh from the farm

ফারুক আলম, লালমনিরহাট: ইতালিয়ান সবজি ব্রকলি চাষে লাভবান হচ্ছেন চাষি। ফুলকফি প্রজাতির এ সবজি এবারই প্রথম চাষ হচ্ছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে। প্রথমবারের মতো চাষাবাদে ভালো ফলন হয়েছে ব্রকলির। লালমনিরহাটে ব্রকলি চাষে বিঘাপ্রতি লাখ টাকার মুনাফার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। 

কৃষি বিভাগের দেয়া পরামর্শে জেলার পাঁচটি উপজেলায় দুজন করে কৃষক চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ভালো বাজার পেলে ব্রকলি চাষে বিঘাপ্রতি লাখ টাকার বেশি আয় সম্ভব। বাজার কম গেলেও বিঘাপ্রতি ৬০ হাজার টাকার বেশি আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয় বাজারে ৫০০-৭০০ গ্রামের প্রতি পিস ব্রকলি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কম হওয়ার পরও কৃষকরা খুশি ব্রকলির সহজ চাষাবাদে। তবে বাজার সৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা হতাশ। তারা জানিয়েছেন, সাধারণ ফুলকফির চেয়ে সামান্য কিছু বেশি দাম পেলেই ব্রকলির চাষ ছড়িয়ে পড়বে। এতে লাভ হবে কৃষকের।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফকরুল আজম ব্রকলি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি জানান, ব্রকলি চাষে ফুলকফির চেয়ে খরচ কম। ৮ হাজার টাকা হলেই এক বিঘায় জমিতে চাষ হয়। প্রতি বিঘায় ৪ হাজার চারা লাগানো যায়।

এবারই প্রথম ব্রকলি খেয়েছেনÑএমন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, ফুলকফির মতোই রান্না করতে হয়েছে। ফুলকফির চেয়ে স্বাদ অনেক বেশি। রান্নার পরে এর থেকে সুন্দর গন্ধ বের হয় এবং খেতে খুব নরম।

কৃষক মনমধু রায় বলেন, ‘এবারই প্রথম ব্রকলি চাষ করেছি। স্থানীয় বাজারে ক্রেতারা অনেক প্রশ্ন করেন। নিতে চান না। এটার প্রচার করলে চাষাবাদ বাড়বে। যদিও শহরাঞ্চলে ব্রকলির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফুলকপির চেয়ে ব্রকলি চাষ সহজ। ফুলকপি একটু দেরি হলে ক্ষেতেই ফুটে যায়। নষ্ট হয়। কিন্তু ব্রকলি জমিতে কিছু দিন রেখেও বাজারে তোলা সম্ভব।’

এ বিষয়ে পুষ্টি নিয়ে কাজ করা কনসালট্যান্ট ডা. আজমল হক বলেন, ‘ব্রকলি লালমনিরহাটে চাষ হওয়া খুশির খবর। এটা ইন্টারন্যাশনাল সবছি। ফুলকপির একটি প্রজাতি। এটা একটা ফ্যাশনেবল সবছি। খুব উপকারী। একটা সময় ঢাকাতেও খেতে চাইত না। ব্রকলির বিশেষ কিছু গুণ রয়েছে। এটা মানুষের (হিট ম্যাকানিজম) শরীরে তাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। প্রচুর দুর্লভ খনিজ আছে। সব বয়সের মানুষ খেতে পারবে। প্রচুর পরিমাণে খাওয়া উচিত। লালমনিরহাটের মানুষ কুসংস্কারে বিশ্বাস করে। কিছু খাবারের সঙ্গে তুলনা করে খেতে চায় না। তিনি আরও বলেন, ব্রকলির চাষ বৃদ্ধি করতে হবে। প্রচারও করতে হবে।’

জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক আলী আশরাফ বলেন, ‘আমরা পাঁচ জেলায় কাজ করেছি। স্থানীয় মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। তাহলেই বাজার সৃষ্টি হবে। বিভিন্ন সভা, মিটিং, মাঠসভায় আমরা আলোচনা করছি। এবার যতটুকু সহায়তা পেয়েছি করেছি। আগামীতে আমরা আরও করব।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০