Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 5:31 pm

বিচারকদের শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির গেজেট প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির বহুল আলোচিত গেজেটটি প্রকাশিত হয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল সোমবার বিকালে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শৃঙ্খলাবিধির গেজেট হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ আগে প্রকাশ শুরু হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, আর ৪৫ মিনিটের মধ্যে পাবলিশড হয়ে যাবে। এর আগে এই বিধিমালায় আপত্তি জানিয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। তার পদত্যাগের পর দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার সঙ্গে আইনমন্ত্রীর আলোচনার পর বিধিমালা চূড়ান্ত হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ কিন্তু অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে একটা ঐকমত্যে পৌঁছে এই শৃঙ্খলাবিধির গেজেট আজ প্রকাশ করা হচ্ছে। এই শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে অনেক নাটক হয়েছিল। আমি আজ আপনাদের বলব, বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। একজন ব্যক্তি এটাকে রাজনীতিকরণ করার চেষ্টার কারণে এটা বিলম্বিত হয়েছিল। সেটা যখনই রিমুভড হয়ে গেছে, আমরা কিন্তু বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগের ঐকমত্যে রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে আজকে গেজেট করতে পেরেছি।’

এর আগে গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়। সরকারের খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থি বলে গতবছর ২৮ আগস্ট শুনানিতে জানায় আপিল বিভাগ। পরে খসড়া সংশোধন করে সুপ্রিমকোর্ট আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। সেইসঙ্গে তা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। পরে দফায় দফায় সময় দেওয়া হলেও সরকারের সঙ্গে আদালতের মতপার্থক্যের কারণে ওই বিধিমালা গেজেট প্রকাশের বিষয়টি ঝুলে থাকে।

উল্লেখ্য, মাসদার হোসেন মামলার চূড়ান্ত শুনানি করে ১৯৯৯ সালে আপিল বিভাগ থেকে সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করতে রায় এসেছিল। ওই রায়ে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারকে সংবিধান পরিপন্থি ও বাতিল ঘোষণা করে জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করা হয়। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে ১২ দফা নির্দেশনা দেন সর্বোচ্চ আদালত। পরে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।