নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারও অস্বাভাবিক দর বাড়ছে উৎপাদন বন্ধ থাকা পুজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য খাতের কোম্পানি বিচ হ্যাচারির শেয়ারে। গত দুই মাসে এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা ও ব্যবসায় পরিবর্তন আসছেÑএ ধরনের প্রচারণা পুঁজিবাজারে ভেসে বেড়াচ্ছে। যার জেরে শেয়ারদর বাড়ছে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে এ-জাতীয় খবর ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য হচ্ছে একটি চক্র এই শেয়ার নিয়ে খেলছে। চক্রটি প্রায়ই এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। যে কারণে অস্বাভাবিক হারে পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদরে হ্রাসবৃদ্ধি।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সম্প্রতি এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ৩১ দশমিক ৪০ শতাংশ। দুই মাসের ব্যবধানে ১৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে দর চলে এসেছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সায়। এর আগে গত জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ১২ টাকা থেকে বেড়ে ২৩ টাকায় চলে যায়। যা ছিল প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের গত দুবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দর। এরপর বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় দর কমে যায়। ফলে দর ১৩ টাকায় চলে আসে। এরপর কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবারও বাড়তে শুরু করে এ শেয়ারের দর।
জানা যায়, বিচ হ্যাচারির মালিকানা ও ব্যবসা পরিবর্তনের ইস্যুকে কেন্দ্র করে একটি চক্র ফায়দা লুটে নিচ্ছে। তারা কারসাজি করে শেয়ারদর বাড়াচ্ছে। আবার দর কমে গেলে নিজেরা শেয়ার কিনে নিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা অথবা ব্যবসায় পরিবর্তন আসছেÑএমন কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। কোনো একটি চক্র এই শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে। আমাদের কাছে এমন কোনো সংবেদনশীল তথ্য নেই, যাতে শেয়ারের দর বাড়তে পারে।’
ব্যবসায় পরিবর্তন আসছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা মৌলভিত্তির বিচার না করে যদি গুজবে কান দিয়ে লেনদেন করেন, তবে এটা তাদের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। আগে বহুবার তাদের এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ থেকে তাদের শিক্ষা নিতে হবে।’
প্রাপ্ত তথ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বিচ হ্যাচারির উৎপাদন। যে কারণে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যার জেরে প্রতিষ্ঠানটি ‘জেড’ শ্রেণিতে নেমে যায়। ২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মহেশখালীপাড়া এলাকায় ৯ দশমিক দুই একর জমির ওপর কোম্পানির হ্যাচারি। কোম্পানিটি চিংড়ি পোনা উৎপাদন ও বিপণন করে থাকে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
গতকাল দিন শেষে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয় ১৭ টাকা ৩০ পয়সায়। অন্যদিকে গত দুবছরের লেনদেন চিত্রে এ শেয়ার সর্বনিম্ন আট টাকা দরে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর বোনাস শেয়ার প্রদান করেছে কোম্পানিটি। ‘জেড’ ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৬.৩৯ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া ৩৪.৯৭ শতাংশ রয়েছে পরিচালকদের কাছে। বাকি ১৮.৬৪ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।