বিজনেস আইডিয়া

SONY DSC

নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন

পিঁপড়ার ডিম বিপণন

পিঁপড়ার ডিম বিপণন করে আয়ের মুখ দেখছেন অনেকে। লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহের পর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। তবে এটি প্রচলিত ব্যবসা নয় কিংবা জনপ্রিয়ও নয় আমাদের দেশে। সচরাচর চোখে পড়ে না এ ব্যবসাটি। মূলত মাছের প্রিয় খাবার হিসেবে পিঁপড়ার ডিম ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পুকুরে ছিপ দিয়ে মাছ ধরার জন্য টোপ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

যে ধরনের পিঁপড়ার ডিম মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেটি সাধারণত সোনালি রঙের পিঁপড়া। এসব পিঁপড়া ঝোপঝাড় বা বড় গাছের ওপরে তিন-চারটি পাতা মুড়ে একটি বাসা তৈরি করে। সেখানে অনেক পিঁপড়ার বসবাস শুরু হয়। এরা বর্ষা ও শীতে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সুকৌশলে সংগ্রহের পর বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। তবে হ্যাঁ, ডিমগুলো যেন তাজা বা জীবন্ত থাকে। মাছ সাধারণত ডিম নষ্ট খায় না।

ডিম সংগ্রহের কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। একেক জায়গায় একেক পদ্ধতি অবলম্বন করে ব্যবসায়ীরা ডিম সংগ্রহ করেন। একটি লম্বা বাঁশের মাথায় ছাতা অথবা থলে লাগিয়ে সংগ্রহ করা যায়। আবার কয়েকটি কলাপাতা মুড়িয়ে থলের মতো বানিয়ে বাঁশের মাথায় গেঁথে সংগ্রহ করা যায়। বাঁশের মাথায় ডালিও বাঁধা যায়। এরপর বড় গাছ কিংবা ঝোপঝাড়ে

পিঁপড়ার বাসা খুঁজে বের করতে হবে। তবে যেমন-তেমন বাসা হলে চলবে না, চাই ডোল পিঁপড়ার বাসা। এমন ডোল বাসায় অনেক ডিম পাওয়া যায়। বাসা খুঁজে পেলে সেখানে বাঁশটি দিয়ে আঘাত করতে হবে। এতে বাসা আলাদা হয়ে বাঁশের মাথায় লাগানো ডালি বা থলেতে জড়ো হয়। এ সময় পিঁপড়ারা আক্রমণ করে, তাই সতর্কতার সঙ্গে বাঁশ নামিয়ে নিতে হবে। কিন্তু যতই সতর্ক থাকুন না কেন, পিঁপড়ার কামড় থেকে রেহাই পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে ব্যবসায়ীরা কিছু কৌশল অবলম্বন করেন বলে তীব্র আক্রমণের শিকার হন না।

এ ব্যবসায় অভিজ্ঞতা থাকা বাঞ্ছনীয়। তা না হলে লাভের বদলে লোকসানের মুখ দেখতে হবে। মনে রাখতে হবে, পিঁপড়ার ডিমই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র হাতিয়ার। তাই কৌশল ও অভিজ্ঞতা দু-ই কাজে লাগাতে হবে। বাসা দেখে বুঝতে হবে কোন বাসায় কেমন ডিম রয়েছে, কীভাবে গাছ থেকে নামাতে হবে, কোন গাছগুলোয় পিঁপড়ারা বাসা বাঁধে প্রভৃতি জানতে হবে। সাধারণত মেহগনি, আম, লিচুসহ দেশীয় নানা ধরনের গাছে পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়। চাইলে একদিনে এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারবেন। আশ্বিন ও কার্তিকের দিকে এ ডিমের চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকে। তবে সব থেকে বেশি ডিম পাওয়া যায় শীতের শেষে ফাল্গুনে।

ব্যবসায়ীদের মতে, এ ব্যবসায় সামান্য পুঁজি প্রয়োজন। পিঁপড়া সংগ্রহের উপকরণগুলোর জন্য পুঁজি দরকার। তাছাড়া নানা স্থান থেকে ডিম সংগ্রহের জন্য ভ্রমণ করতে হয়। লাল

পিঁপড়ার ডিম প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি করা যায়। সাধারণত সৌখিন মাছ শিকারীরা এ ডিম কেনেন।

পিঁপড়ার ডিম মাছের প্রিয় খাবার। বড়শিতে আটা-ময়দা বা পাউরুটির সঙ্গে পিঁপড়ার ডিম মিশিয়ে দেওয়া হলে বড় মাছ সহজে টোপ গেলে। মাছ শিকারীদের কাছে জনপ্রিয় টোপ পিঁপড়ার ডিম। এছাড়া পুকুরের নির্দিষ্ট স্থানে ডিম ফেলে মাছ জড়ো করার জন্যও এর চাহিদা রয়েছে জেলেদের কাছে। এজন্য জেলেরাও ডিম কেনেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০