নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায়Ñএমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের এই সাপ্তাহিক আয়োজন
ছোট পুঁজির বড় ব্যবসা চা পাতার ব্যবসা। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভের ব্যবসা করতে চাইলে শুরু করতে পারেন চা পাতার ব্যবসা। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৮৫ ভাগ মানুষ চা পান করে। তাই চা পাতার চাহিদা রয়েছে। আমাদের দেশে এটি ভীষণ জনপ্রিয়। সুতরাং নিশ্চিন্তে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
কেন করবেন
ব্যবসা করতে গেলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় পুঁজির। দেখা যায়, বেকারদের ব্যবসার প্রতি আগ্রহ থাকলেও পুঁজির অভাবে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয়। সেদিক থেকে এ ব্যবসার জন্য পুঁজির চিন্তা করতে হয় না। সামান্য পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসা ঠিকমতো শুরু করতে পারলে সাফল্যের মুখ দেখবেন আপনিও।
কীভাবে শুরু করবেন
চা পাতার ব্যবসা সাফল্যের সহজ মাধ্যম। তাই বলে কোনো প্রস্তুতি ছাড়া শুরু করা ঠিক হবে না। এজন্য প্রথমে স্থানীয় পাইকারি চায়ের দোকানগুলোয় ঘুরে দেখতে হবে। দেখতে হবে কোন মানের চা পাতা বেশি চলে। তারপর দেখতে হবে অন্য ব্যবসায়ীরা কত দামের মধ্যে চা পাতা কেনাবেচা করে থাকে, কোথায় পাইকারি দামে বিক্রি হয়। এসব যাচাই-বাচাই করে চা ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
সাবধানতা
ব্যবসার জন্য যখন পাইকারি চা পাতা কিনবেন, তখন কষ, লিকার, ভালো গন্ধÑএসব যাচাই করে ভালো মানের চা পাতা কিনতে হবে। ব্যবসার শুরুতে যদি পণ্যের মান ভালো না থাকে, তাহলে ক্রেতা হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা থাকবে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। আপনি ব্যবসার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারেন। আর অবশ্যই প্রথম দিকে কম লাভে চা পাতা বিক্রি করতে হবে। সেটা হোক খোলা চা পাতা অথবা হোক প্যাকেট চা পাতা। ক্রেতা আপনাকে নয়, দেখবে আপনার চা পাতার লিকার কেমন হয় ও রং কেমন হয়। বিশেষ করে লিকার, রং ও স্বাদের ওপর ভিত্তি করে চা পাতার ব্যবসা চলে। তাই এসব বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।
কোথা থেকে কিনবেন
অকশন থেকে চা পাতা কিনতে পারেন। চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে চা পাতার অকশন হয়। বাংলাদেশ চা বোর্ড কর্তৃক এ অকশন ডাকা হয়। সেখান থেকে চা পাতা কেনা উত্তম। এজন্য অবশ্যই আপনাকে চা বোর্ড থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হতে হবে। এরপর বৈধভাবে আপনি চা পাতা কিনতে পারবেন। তবে এ ব্যাপারে অবশ্যই অভিজ্ঞ হতে হবে। নতুবা ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। অকশন ছাড়া যারা ব্লান্ড করে তাদের কাছ থেকেও কিনতে পারেন। তাদের কাছেও ভালো মানের চা পাবেন।
কীভাবে চা পাতা বিক্রি করবেন
দুভাবে চা পাতা বিক্রি করতে পারেন। অকশন অথবা ব্লান্ড করা চা পাতা পাইকারি দামে কিনে স্থানীয় দোকান কিংবা চা স্টলে বিক্রি করতে পারেন। আবার নিজে দোকান দিয়েও বিক্রি করতে পারেন। যদি সব সময় সঠিক মানের চা পাতা ক্রেতাদের দিতে পারেন, তাহলে ক্রেতারা আপনার পণ্য কিনবেন। তাই ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনায় রাখতে হবে। অন্যদিকে আপনি যদি টি স্টলগুলোতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন, সেক্ষেত্রে চা পাতা এক দিন দিয়ে আর তিন দিন সেই দোকানে না যাওয়া হয়, তাহলে ওই দোকানি আপনার জন্য বসে থাকবে না, অন্য কারও কাছ থেকে চা পাতা কিনতে শুরু করবে। তাই প্রতিদিন পণ্য নিয়ে দোকানে যেতে হবে ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। এভাবেই চালাতে হবে আপনার চা পাতার ব্যবসা।