বিজনেস আইডিয়া: বাইসাইকেলের ব্যবসা

নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের এ সাপ্তাহিক আয়োজন

ব্যবসায় উদ্যোগ নিয়ে ভাবছেন? তাহলে শুরু করতে পারেন বাইসাইকেলের ব্যবসা। শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্য সচেতন ও অফিসগামীদের অন্যতম বাহন সাইকেল। শহরের যানজট ঠেলে গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশ সহায়ক এ বাহনটি। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে এর চাহিদা বেশি। এছাড়া শৌখিন সাইকেল চালকের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই নানা জেলায় গড়ে উঠছে সাইকেলের পাইকারি ও খুচরা দোকান। আপনিও অল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা। সাইকেল ব্যবসার পাশাপাশি সাইকেলের পার্টসও বিক্রি করতে পারেন।

যা প্রয়োজন: সাইকেলের ব্যবসার জন্য প্রথমে প্রয়োজন একটি দোকান ঘর। শহরের প্রাণকেন্দ্রে হলে ভালো। গ্রামেও এর দোকান দিতে পারেন। পুঁজির প্রয়োজন পড়বে। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারি হিসেবেও বিক্রি করতে পারেন। এ ব্যবসায় নামতে হলে সিটি করপোরেশন কিংবা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে। এছাড়া এ ব্যবসার জন্য অভিজ্ঞ কর্মী নিয়োগ দিতে হবে।

শুরুর আগে: শুরু করার আগে বাইসাইকেলের ব্যবসার সম্পর্কে বিশদ ধারণা থাকলে ভালো। পাইকারি বাজার থেকে সাইকেল কেনার আগে মানের বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। খোলাবাজার থেকে না কিনে আমদানি অথবা দেশীয় পাইকারি বাজার থেকে কেনা ভালো। চীন কিংবা ভারত থেকে সাইকেল ও পার্টস আমদানি করতে চাইলে এ-সংক্রান্ত ছাড়পত্র নিতে হবে।

বিনিয়োগ: রাজধানীর বাইরে সাইকেলের ব্যবসা শুরু করতে চাইলে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে চলবে। ব্যবসার পরিসর অনুযায়ী টাকার পরিমাণ নির্ভর করে। তবে পাইকারি ব্যবসা করতে চাইলে মূলধন তুলনামূলক বেশি প্রয়োজন।

গ্রাহক যারা: যানজট এড়াতে ও পরিবহন খরচ কমাতে সর্বোপরি পরিবেশবান্ধব হওয়ায় সাইকেল এখন বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফ্যাশনেবল সাইকেল। শিক্ষার্থীরাই সাইকেল কেনার দিকে বেশি ঝুঁকছে। মধ্যবয়স্ক অনেক মানুষ ব্যায়ামের অন্যতম উপকরণ হিসেবে সাইকেল বেছে নিচ্ছেন। শিশুদের ছোট সাইকেলও বিক্রি হয় বেশ।

পার্টসের দোকান: মূল ব্যবসার পাশাপাশি দোকানে রাখতে পারেন সাইকেলের নানা পার্টস। টায়ার, টিউব, রিং, হ্যান্ডেল বার, ফ্রন্ট ফ্রক, রিয়ার হাব, সিট, ফ্রন্ট হাব আক্সেল, কেব্ল লক, ব্রেক সো, হ্যান্ডেল ব্রেক লাইন, সেট, লক, বেল, স্পোক, ব্যাক সিট, ফ্রি হুইল, ব্রেক পার্টস, স্ট্যান্ড, হুইল, প্যাডেল, সিট, বল, ব্রেক লাইন, হেড পার্টস, চেইন, গিয়ার, হ্যান্ডেল বার ও চেইন অ্যাডজাস্টার, পটার পিন প্রভৃতি খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করতে পারেন।

যোগ্যতা: এ ব্যবসার জন্য অভিজ্ঞতা ছাড়া আর বিশেষ কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন পড়ে না।

প্রচারণা: ব্যবসায় লাভের জন্য প্রচারণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যবসা শুরুর সময় স্থানীয়ভাবে প্রচারণা চালাতে হবে। মাইকিং কিংবা পোস্টারিং করতে পারেন। বিলি করতে পারেন লিফলেটও। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ফেসবুকে পেজও খুলতে পারেন। এখানে নানা মডেলের সাইকেলের দামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য ও ছবি পোস্ট করে ব্যবসার পরিধি ও বিক্রি বাড়াতে পারেন।

লাভের হিসাব: সাইকেলের ব্যবসায়

লাভ-লোকসান নির্ভর করে ব্যবসার প্রসারের ওপর। সাইকেল পাইকারি হিসেবে কিনে এর পরিবহন খরচ, কর্মী খরচ বাদ দিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা লাভে রেখে বিক্রি করতে হবে। অতিরিক্ত লাভের আশায় যদি বেশি দামে বিক্রি করতে চান তাহলে লাভের থেকে ক্ষতি হওয়ারই সম্ভাবনা থাকবে। প্রথমদিকে কম লাভে ব্যবসা শুরু করুন। ভালোভাবে শুরু হলে প্রতিদিনই সাইকেল বিক্রি হবে। এতে লাভের মুখ দেখতে পারবেন। এ ব্যবসার শুরুতে মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুনাফা হতে পারে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০