নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে, কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন
প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান সঠিকভাবে পরিচালনা করার পাশাপাশি সুন্দর ও রুচিশীল অনুষ্ঠান উপহার দেওয়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ। ভেন্যু নির্বাচন, খাবার, পরিবহন, ক্যাটারিং, সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং, পোস্টারিং, ব্যানার, ফুল, মিডিয়া কভারেজ, বিজ্ঞাপন, আমন্ত্রণপত্র ছাপানো, আমন্ত্রণ জানানো, ডেকোরেশন, অতিথিদের অভ্যর্থনা, অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ সব বিষয় নিখুঁতভাবে আয়োজন করে থাকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম। বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যক্তিগত উৎসবের আয়োজনও। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন সব ধরনের আয়োজনে সাহায্য নিচ্ছে এ ধরনের ফার্মের। স্বাবলম্বী হতে আপনিও চালু করতে পারেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম। এ উদ্যোগের জন্য দরকার সাহস, বুদ্ধিমত্তা ও আত্মবিশ্বাস।
সম্ভাবনা
গায়ে হলুদ, বৌভাত, বিয়েবার্ষিকী, জš§দিন, কনসার্ট, ডিজে পার্টি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, করপোরেট অনুষ্ঠান, মেলা, প্রদর্শনী, ফ্যাশন শো, সমাবর্তন, পিকনিক, অফিসিয়াল মিটিংসহ ছোট-বড় সব ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম।
গ্রাহক সেবা
ব্যবসায় গ্রাহক ধরে রাখা ও সন্তুষ্ট রাখার ভালো উপায় উন্নত মান। নতুন কিছু সৃষ্টি করা। সেবার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠান থেকে আবার সেবা গ্রহণ করবে-নাকি করবে না, সেই মান ধরে রাখার সংকল্প। সুতরাং কাজের মান ঠিক রাখতে হবে। মান ভালো হলে বাড়তে থাকবে কাজের পরিমাণ।
আয়
এ ব্যবসায় আয় নির্ভর করে বিনিয়োগ, কাজের সংখ্যা ও পরিমাণের ওপর। অফিস না নিয়ে অল্প পুঁজিতেও আপনি শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে দুই থেকে তিন লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে বড় কাজ না ধরে ছোট কাজ দিয়ে শুরু করতে পারেন। এতে চাপ থাকবে কম। বেশি বিনিয়োগও করতে হবে না। তবে অফিস নিয়ে কাজ শুরু করতে চাইলে স্থানভেদে বিনিয়োগে টাকার পরিমাণ বেশি লাগবে। এ পেশায় যত বেশি স্মার্ট ও দক্ষ হতে পারবেন, ততই লাভজনক কাজের কন্ট্রাক্ট পাওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কাজ পাওয়ারও সুযোগ বাড়বে।
প্রচার ও প্রসার
ছোট বা বড় সব ব্যবসায় প্রচারেই প্রসার। প্রচারেই হয় ব্যবসার সমৃদ্ধি ও উন্নতি। তাই প্রচার ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
স গ্রাহক তৈরির সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নেটওয়ার্কিং। তাই নেটওয়ার্কিংয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করুন। নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। যোগাযোগে দক্ষ হলে ব্যবসার প্রসার বাড়বে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পেশাগত ইভেন্টগুলোয় অংশ নিন। এসব ইভেন্টে বিভিন্ন পেশার মানুষ একত্র হয়। তাদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন এবং সম্পর্ক গড়ে তুলুন, যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। সে সঙ্গে আপনার বন্ধু-বান্ধব, আত্ময়-স্বজন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন
স যে কোনো পণ্য বা সেবা প্রচারের জন্য অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে বিজ্ঞাপন। টিভি, রেডিও, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, বিলবোর্ড, লিফলেট প্রভৃতিতে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। বর্তমানে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী যে কোনো মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন
স বিজ্ঞাপনের আরেকটি মাধ্যম ই-মেইল। এর বড় সুবিধা গ্রাহকের শ্রেণিভেদে একই বার্তা আলাদা আলাদা গ্রাহকের কাছে পাঠাতে পারবেন। এছাড়া টার্গেট করা ক্রেতাদের বিভিন্ন সেবা, অফার, ছাড় প্রভৃতি তথ্য জানাতে পারবেন
স ভিজিটিং কার্ড তৈরি করুন। নতুন সম্পর্কের সেতুবন্ধনে সহায়তা করে এটি। এতে নিজের নাম, মোবাইল ফোন নম্বর ও প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় উল্লেখ করুন। আকারে ছোট হলেও ব্যবসার প্রচারের ক্ষেত্রে কার্ডের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে
স ব্যবসার প্রসার বাড়াতে সবাই এখন ফেসবুক ব্যবহার করে। কম সময় ও কম খরচে দ্রুত গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম এটি। ব্যবসার প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি গ্রাহক ধরে রাখার জন্য ফেসবুকে পেজ খুলুন। অ্যাকটিভ থাকুন। নিয়মিত পোস্ট, ভিডিও ও গ্রাহকের রিভিউ ফেসবুক পেজে শেয়ার করুন।
অভিজ্ঞতা
এ বিষয়ে কোর্স করে নিতে পারেন। দেশে ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে এর ওপর কোর্স করানো হয়। অনলাইনেও বিভিন্ন কোর্স করা যায়। এছাড়া ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন। যারা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে, তাদের কাজের ধরন লক্ষ্য করুন, জানুন ও শিখুন। এতে অভিজ্ঞতা বাড়বে। অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন।
শিপন আহমেদ