নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন
পেঁপে চাষ
শুধু ফল হিসেবেই নয়, সবজি হিসেবেও সমান জনপ্রিয় পেঁপে। খেতেও সুস্বাদু। এর উৎপাদন খরচও তুলনামূলক কম। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ ও ক্যারেটিন। সব ধরনের মাটিতেই ফলে এটি। তবে পরিচর্যায় হতে হবে সতর্ক। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি দুটোই পেঁপে চাষে উপযুক্ত।
কাঁচা ও পাকা পেঁপে দুটোরই কদর রয়েছে। সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। তাই সারা বছরই সবার কাছে এর চাহিদা থাকে। পেঁপে চাষ করে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। এছাড়া দেশের চাহিদা মেটানোর পর অতিরিক্ত উৎপাদন বিদেশেও রফতানি করা যায়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সহায়তা করে থাকে।
পেঁপে চাষের আগে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া ভালো। চাষাবাদে অভিজ্ঞ কিংবা স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসারদের সহযোগিতা নিতে পারেন। সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাহায্যও নিতে পারেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে স্থানীয় পেঁপে ও শাহী পেঁপে চাষ হয়ে থাকে। কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে পৌষ মাসের মধ্যে ও মাঘ মাসের মাঝামাঝি থেকে চৈত্র মাসের মধ্যে বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। তবে শাহী পেঁপে সারা বছর চাষ করা যায়। উঁচু ও মাঝারি উঁচু উর্বর দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো। এছাড়া পরিচর্যা করলে সব ধরণের মাটিতেই পেঁপের ভালো ফলন হয়।
চারা নিজেও তৈরি করতে পারেন বাড়িতে। আবার কিনেও নিতে পারেন নিকটস্থ নার্সারি থেকে। তবে বাড়িতে তৈরি করতে চাইলে পলিথিন ব্যাগে বীজ রোপণ করুন। এজন্য ১৫–১০ সে.মি. আকারের ব্যাগে সমান পরিমাণ বালি, মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে ব্যাগের তলায় দু-তিনটি ছিদ্র করতে হবে। এরপর সদ্য তোলা বীজ হলে একটি ও পুরোনো হলে দু-তিনটি বীজ বপন করতে হবে। তবে একটি ব্যাগে একের বেশি চারা রাখা উচিত নয়।
চারা রোপণ ও পরিচর্যা পদ্ধতি
দেড় থেকে দুই মাসের চারা রোপণের জন্য উপযুক্ত। গর্ত করতে হবে ৬০–৬০ সে.মি. আকারে। গর্তগুলোয় চারা রোপণের কিছুদিন আগে থেকে সার মিশিয়ে রাখতে হবে। ভালো ফলনের জন্য মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে এতে সার প্রয়োগ করতে হবে। সার হিসেবে গরুর গোবর, পচনশীল আবর্জনা খুব কাজে দেয়।
রোগবালাই ও প্রতিকার
ঢলে পড়া রোগে প্রচুর পরিমাণে পেঁপে গাছ মারা যায়। বর্ষায় কাণ্ড পচা রোগ হতে পারে। রোগগুলো সংক্রামক। এর থেকে গাছগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পোকা দমন না হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণত এক বছরের মাথায় পেঁপে ধরে।