নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন
বুটিক হাউজ ব্যবসার চাহিদা ব্যাপক। প্রসারিত হচ্ছে এ সেক্টরটি। এছাড়া তরুণ ও তরুণীরা ফ্যাশনের প্রতি বেশ সচেতন। তাই দেশে গড়ে উঠছে অনেক ফ্যাশন হাউজ, বুটিক হাউজ, জরি হাউজ প্রভৃতি। বুটিক হাউজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রায় সব শহরে। ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম ও সৃজনশীল তরুণদের জন্য বুটিক হাউজের ব্যবসা হতে পারে কর্মসংস্থানের অন্যতম উপায়।
সুবিধা
তুলনামূলক কম পুঁজি লাগে
লাভ বেশি
বাজার সম্ভাবনা
দেশে ও বিদেশে বুটিক হাউজের পোশাকের ভালো চাহিদা রয়েছে। ঈদ, নববর্ষসহ বিভিন্ন উৎসবে সবাই নতুন পোশাক কেনেন। বিশেষ করে সুতি, খাদি, সিল্ক প্রভৃতি কাপড়ে বুটিক করা হয়। আর এসব বুটিক করা কাপড়ের চাহিদা সব সময়ই থাকে।
উপকরণ
টেইলারিং মেশিন, কাঠের ডাইস রং, বিভিন্ন রঙের সুতা, সুই প্রভৃতি। এসব উপকরণ রাজধানীর গাউছিয়া, চাঁদনি চক, চকবাজার, নিউমার্কেটে পাওয়া যায়। কেনার সময় অভিজ্ঞ লোক সঙ্গে রাখতে পারেন।
স্থান নির্বাচন
বুটিক হাউজগুলো সাধারণত একই স্থানে গড়ে ওঠে, যেখানে একসঙ্গে অনেক দোকান বা মার্কেট ঘুরে দেখে কাপড় কেনা যায়। ক্রেতারা সেখানে বেশি যান। তাই স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
কাগজপত্র
নিকটস্থ পৌরসভা কিংবা ইউপি অফিস থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি’র বিনিময়ে ট্রেড লাইসেন্স করে নিন। নিজের জায়গা দলিলপত্র কিংবা ভাড়া হলে তার চুক্তিপত্র করে নিন। এতে সরকারি ও বেসরকারি অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।
প্রচার
‘প্রচারেই প্রসার’। তাই ব্যবসা শুরুর আগে প্রচার চালালে মানুষ আগ্রহী হয়ে ওঠে। লিফলেট ও পোস্টারের মাধ্যমে প্রচার শুরু করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন, এমনকি টিভিতেও বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। স্টেজ শো’র মাধ্যমে আপনার পোশাক অন্যের সামনে সহজেই তুলে ধরতে পারেন। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট করে নিতে পারেন।
লক্ষ রাখুন
এটি একটি সৃজনশীল পেশা। তাই ভালো লাগার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
দোকানের নাম ও লোগোসহ শপিংব্যাগ তৈরি করে নেবেন
ভবিষ্যতের কথা ভেবে আপনার দোকানের নাম, লোগো বাছাই করুন
ক্রেতাদের যোগাযোগের জন্য দোকানের ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিতে হবে
মানুষের ফ্যাশন ও রুচির পরিবর্তন হতে পারে। সে অনুযায়ী আপনার পোশাকে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করুন
ভালো মানের কারিগর নিয়োগ
দিতে হবে
স প্রয়োজনীয় উপকরণ ও কাঁচামাল সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক
পুঁজি
৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে টাকার পরিমাণ দোকানের অবস্থান, আকার, চাহিদা অনুযায়ী কম-বেশি হতে পারে। পোশাকে অবশ্যই স্বকীয়তা থাকতে হবে। ক্রেতার সন্তুষ্টি ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে পোশাক ভালো চলবে। কম দামে ভালো ও আধুনিক মানের পোশাক সরবরাহের লক্ষ্য থাকলে ব্যবসার সুনাম বাড়বে এবং দিন দিন এটি সম্প্রসারিত হবে। ধীরে ধীরে আপনি নিজেই কাপড় কাটা, সেলাই, অ্যামব্রয়ডারি, ব্লক প্রিন্ট, জরি, চুমকি পুঁতির কারখানা গড়ে তুলতে পারলে ব্যবসার জন্য ভালো হবে।
প্রশিক্ষণ
বুটিক হাউজ বা এ ব্যবসা শুরুর আগে প্রশিক্ষণ নেওয়া ব্যবসায় সফলতার মূলমন্ত্র। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরনের প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। বিসিক, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, প্রতিবেশী ট্রেনিং সেন্টার, ঘরকন্যা প্রভৃতি রয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইল, নরসিংদী, সিরাজগঞ্জ, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকায় একেক বিষয়ে অভিজ্ঞ তাঁতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
শিপন আহমেদ