নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন
স্ক্রিন প্রিন্ট
কাপড় ছাপার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে স্ক্রিন প্রিন্ট। এটি এক ধরনের ছাপার পদ্ধতি। অনেকদিন আগে থেকেই ছাপার কাজে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। একটা চারকোনা ফ্রেমে স্ক্রিনটি টানটান ও সমান করে লাগিয়ে নিতে হয়। স্ক্রিনটি যে কোনো লেখা বা আঁকা ছবি ধারণ করতে পারে। এক্ষেত্রে স্ক্রিন ছাপার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে একে স্ক্রিন প্রিন্ট বলে। বর্তমানে এটি খুবই জনপ্রিয়। এর পরিচিতি ও কাজের ক্ষেত্র দিন দিন বাড়ছে। তাই যে কোনো নারী কিংবা পুরুষ অল্প পুঁজি নিয়ে ঘরে বসে কাপড়ে স্ক্রিন প্রিন্ট করার ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
সুবিধা
স তুলনামূলক কম পুঁজি লাগে
স স্ক্রিন প্রিন্ট শুধু কাপড়ে নয়; কাগজ, প্লাস্টিক ও সিরামিকসেও ছাপা কিংবা প্রিন্ট করা যায়
বাজার সম্ভাবনা
পোশাকের মধ্যে টি-শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টপস ও জিনসে কাজ করা হয়। তৈজসপত্রের মধ্যে মগ, জগ, গøাস, প্লেট, পিরিচ প্রভৃতি। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের খেলনা, পুতুল, চাবির রিং, পেপার ওয়েট, ক্রেস্ট, মেডেল ও কোটের বড় বোতামে স্ক্রিন প্রিন্ট করা হয়। ব্যানার ও ফেস্টুনেও স্ক্রিন প্রিন্ট করা হয়।
কাগজপত্র
নিকটস্থ পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ অফিস থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফির বিনিময়ে ট্রেড লাইসেন্স করে নিন। নিজের জায়গা দলিলপত্র কিংবা ভাড়া হলে তার চুক্তিপত্র করে নিন। এ ছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, টিন ও ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন থাকলে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে।
স্থায়ী উপকরণ
টেবিল, স্কুইজার, ফ্রেম, হার্ডবোর্ড, ক্লিপ, কাচ, কাঠের ফ্রেম, কাঁচি, হাতুড়ি, তুলি, ড্রায়ার, পেরেক, ফোম, স্ক্রু প্রভৃতি।
কাঁচামাল
সেনোকেট, পটাশিয়াম বাই ক্রোমাইড, আইপিআই, বেনজিন, রিমুভার, বিøচিং পাউডারসহ বিভিন্ন ধরনের বেসিক লিকুইড রং প্রভৃতি।
সাবধানতা
স রং ও অন্য উপাদান ঠিকমতো মেশাতে হবে। তা না হলে ছাপার রং উজ্জ্বল হবে না।
স ফ্রেম থেকে স্ক্রিন যাতে ছিঁড়ে না যায় তাই স্ক্রিন খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হবে। স্ক্রিন দেখে-শুনে কিনতে হবে। কারণ একটি স্ক্রিন দিয়ে অনেকবার কাজ করা যায়। কাজ শেষে স্ক্রিন পরিষ্কার করতে হবে।
স রং ও অন্যান্য উপাদান শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।
পুঁজি
৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন।
লাভ
টি-শার্ট
প্রায় সব দোকানে স্ক্রিন প্রিন্ট টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে। তাই এসবের অর্ডারও ভালো পাবেন আশা করা যায়। ডিজাইন ও কাপড় ভালো হলে শোরুমে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায় কেনাবেচা হয়ে থাকে। খরচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা। খরচ বাদে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ লাভ থাকে। তবে কাজের গুণগত মান যত ভালো হবে, লাভও তত বেশি হবে। উৎপাদন বেশি হলে নিজস্ব শোরুম বাদে আশপাশের শোরুমেও সরবরাহ করতে পারেন।
সিরামিকসের মগ, জগ, গøাস, প্লেট, পিরিচ প্রভৃতিতে স্ক্রিন প্রিন্ট হয়। এসব জিনিসপত্রে স্ক্রিন প্রিন্ট ৪০ থেকে ৫০ টাকা খরচ হয়। কাজের অর্ডার পেতে পারেন ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমেও। তবে বেশি কাজের জন্য বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। অনেক প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে সম্মেলন বা বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করে। তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন।
প্রশিক্ষণ
এ কাজে বড় ডিগ্রির প্রয়োজন নেই, সৃজনশীলতা দরকার। রং, কাপড় ও কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। সরকারিভাবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন স্ক্রিন প্রিন্টের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়।
শিপন আহমেদ