বিজনেস আইডিয়া

নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক করতে হবে, কী দিয়ে শুরু করবেন। এজন্য দরকার অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায়, এমন বিজনেস। এ ধরনের উদ্যোক্তার পাশে দাঁড়াতে শেয়ার বিজের সাপ্তাহিক আয়োজন বাঁচিয়ে রাখুন দেশি পণ্য

শিবলী রহমান শুভ

পত্রিকার পাতা খুললেই তাঁত, মৃৎশিল্পসহ দেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলোর দুর্দশার চিত্র ফুটে ওঠে। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণে জটিলতাসহ বেশিকছু প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শিল্পগুলো টিকে থাকতে পারছে না। এসব শিল্প বাঁচাতে কিছু করার তাড়না থেকেও নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। একইসঙ্গে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি দেশি পণ্য টিকিয়ে রাখতেও ভূমিকা রাখতে পারবেন।

নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাঁতিদের নিয়ে কাজ করতে পারেন। তাঁতশিল্পে উৎপাদন ও পণ্য বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা থাকলে তাঁতিদের পাশে দাঁড়াতে পারেন।

শুরুতে তাঁতিদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করুন। তাদের উৎপাদিত পণ্য, উৎপাদন খরচ ও বাজারের চাহিদা সম্পর্কে ধারণা নিন। কাঁচামাল, মূলধন ও উৎপাদিত পণ্য কেনা বিষয়ে আপনি কীভাবে তাদের সহায়তা করতে পারেন সে বিষয়ে কথা বলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। সেই সঙ্গে উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্পর্কে জরিপ করতে পারেন। এরপর তাঁতি বাছাই করে তাদের উৎপাদিত পণ্যের মান যাচাই করে নিন। প্রয়োজন হলে বাজারে চাহিদা আছে এমন পোশাক তৈরি সম্পর্কে তাদের প্রয়োজনীয় ধারণা দিন। ক্ষেত্রবিশেষে তাঁতিদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারেন। সম্ভব হলে ফ্যাশন ডিজাইনারের সাহায্য নিন। নির্ধারিত ডিজাইন অনুযায়ী অল্প কিছু পোশাক তৈরি করুন। এরপর ওয়েবসাইট, ফেসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে পণ্যের প্রচার চালান। গ্রাহকদের কাছ থেকে পণ্যের অর্ডার নিন।

এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রাহকের ঘরে পোশাক পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে অর্ডার নিন। তাঁতিদের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কিনে দিন। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পোশাক সংগ্রহ করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিন। তাঁতিকে ন্যায্যমূল্য দেওয়াসহ সব খরচ বাদ দিয়ে মুনাফার একটি অংশ পরবর্তী সময়ের জন্য রাখতে পারেন। চাইলে কিছু তৈরি পোশাক স্টক করেও রাখতে পারেন।

পুঁজির চেয়ে এসব ব্যবসার কিছু মূলমন্ত্র থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে পণ্যের মান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উৎপাদন ও বিপণন। প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে চালু রাখা জরুরি। সবকিছু ঠিক থাকলে অল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেন। এতে কেবল আপনিই নন, পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীও উপকৃত হবে। সেই সঙ্গে টিকে থাকবে ঐতিহ্যবাহী দেশি পণ্য।