নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ১২ ডিসেম্বর দেশে ফাইভ-জি প্রযুক্তির সেবা পরীক্ষামূলকভাবে উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করবে। সরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি চালুর কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) কাউন্সিল হলে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ‘ফাইভ-জি: দ্য ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০১৮ সালে ঘোষিত বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সর্বাধুনিক মোবাইল প্রযুক্তি সেবা ফাইভ-জি চালু করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসির নির্দেশনা মোতাবেক রাষ্ট্রীয় একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রাথমিক পর্যায়ে বর্তমান ফোর-জি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে সীমিত পরিসরে আগামী ডিসেম্বর মাসে ফাইভ-জি চালু করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রথমে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরকারি কার্যালয় ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সীমিত পরিসরে ফাইভ-জি সেবা চালু হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই সেবা দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও শিল্পপ্রতিষ্ঠাননির্ভর এলাকাগুলোয় বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফাইভ-জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকের মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সরকার ও এন্টারপ্রাইজ এবং ইউটিলিটি সার্ভিস প্রোভাইডাররা আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট ফ্যাক্টরি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। মুজিববর্ষে এটি একটি বিশাল উদ্যোগ। ফাইভ-জি প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত গুণগত মানের ভয়েস কল ও ফোর-জি থেকে ২০ গুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ফাইভ-জির মাধ্যমে চালকবিহীন গাড়ি চলবে রাস্তায়। ফাইভ-জি চালু হলে কল ড্রপের সংখ্যা কমে যাবে বলে আমরা আশা করি। মানুষ ও ডিভাইসের মধ্যে তৈরি হবে জিরো ডিসটেন্স কানেক্টিভিটি। বিগডেটা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে ফাইভ-জি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ফাইভ-জি চালু হলে আমূল পরিবর্তন আসবে চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কিংবা অগমেন্টেড রিয়েলিটির এক্সপেরিয়েন্স নেয়া ফাইভ-জির কল্যাণে আরও সহজ হয়ে যাবে। ফেসবুকসহ বিশ্বের সব বড় কোম্পানি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং মেটাভার্স নিয়ে কাজ করছে, যা হবে অদূর ভবিষ্যতের মূল নিয়ামক প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তিগুলোই আমাদের তরুণদের কাছে পৌঁছে দিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহাব উদ্দিন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. রনক আহসানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর।