Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:10 pm

বিজিএমইএ’তে নতুন নির্বাচনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএতে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে এক দল ব্যবসায়ী। গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে বিজিএমইএ’র বর্তমান পর্ষদ ভেঙে দেয়ার দাবি জানান মাইশা ফ্যাশনসের এমডি মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান পর্ষদে যারা আছেন, তারাও সুষ্ঠু নির্বাচন করে আসেননি। অনেকে ভোট দিয়েছেন, তারা ভোটারও হতে পারেন না। আমরা মামলা করেছিলাম, কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে আদালতকে বুঝিয়ে তাদের পক্ষে রায় নিয়ে নির্বাচন করে।’ চলতি বছরের গত মার্চে বিজিএমইএর নির্বাচনে ২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য ‘সম্মিলিত পরিষদ’-এর প্যানেল বিজয়ী হয়, যারা আওয়ামীপন্থি হিসেবে পরিচিত।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোয়ও নেতৃত্বের পরিবর্তনের দাবি উঠতে থাকে।

পর্ষদ ভেঙে দেয়া ও নতুন করে সঠিক ভোটার তালিকায় নির্বাচনের দাবিতে ৭ আগস্ট সরব হন বিজিএমইএর সবশেষ নির্বাচনে হেরে যাওয়া ‘ফোরামের’ প্যানেল লিডার ফয়সাল সামাদ। সবশেষ গত ১৯ আগস্ট বিজিএমএইর বর্তমান পরিচালক পর্ষদ ভেঙে দেয়া ও নতুন নির্বাচনের দাবি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন সদস্যদের একাংশের জোট ‘ফোরাম’ প্যানেলের মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী। এর মধ্যে ২৪ আগস্ট পদত্যাগ করেন সংগঠনের সভাপতি এসএম মান্নান কচি, যিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গত ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ক্ষমতায় আসে, যাতে সাধারণ সদস্যদের মনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ‘বর্তমানে পুনর্গঠিত কমিটির সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বিজিএমইএ’র আগের কমিটির পলাতক সভাপতির সময়ে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। বর্তমান কমিটির প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রহত্যার একজন আসামি।’
বিজিএমইএ’তে গত ১০ বছরে কোনো ভোটই সুষ্ঠু হয়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা এই পর্ষদ মানি না। অবিলম্বে পরিচালনা পর্ষদকে ভেঙে দিতে হবে। প্রকৃত ভোটার দিয়ে একটি নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্বাচনে যে কেউ দায়িত্ব নিক, আমরা মেনে নেব।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে ২০ সদস্যের একটি অন্তর্বর্তীকালীন পরিচালনা বোর্ড গঠন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং বিজিএমইএতে ঘটা অতীতের দুর্নীতি তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করার দাবি জানানো হয়। ‘সাধারণ সদস্যদের’ নামে ডাকা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিইউএফটি) ট্রাস্টি বোর্ড ভেঙে দেয়ার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত বিইউএফটির শিক্ষার্থী সেলিম তালুকদারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অনন্ত গার্মেন্টসের এমডি ইনামুল হক খান বাবলুসহ পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।