Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:08 pm

বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোজার গুরুত্ব ও উপকারিতা

মো. জিল্লুর রহমান: রমজান মাসের রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে চতুর্থ এবং এটা ফরজ ইবাদত। রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে কী বলা হয়েছে, তা আমরা সবাই কমবেশি জানি। কোরআনে আল্লাহপাক এরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্যে সিয়ামের বিধান দেয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।’ (সুরা বাকারা-২: ১৮৩) এবং আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে। (সুরা বাকারা-২:১৮৪)।

আল্লাহর কাছে রোজা এতটাই গুরুত্ব বহন করে যে, হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব।’ আর হাদিসে রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেছেন, যখন রমজান মাস আসে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। (বুখারি, মুসলিম)

রোজা পালন করতে গিয়ে একজন মুসলিমের রমজান মাসের প্রতিদিন সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার ও শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হয়। এছাড়া মুসলিমরা এসময় সকল প্রকার ঝগড়া-বিবাদ, মিথ্যা কথা, অশ্লীল যৌন প্রবৃত্তির মতো কর্ম করা থেকে বিরত থেকে নিজেদের শরীর ও মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে। এ কারণে রোজা যে শুধু মাত্র আধ্যাত্মিক উন্নতিই সাধন করে তা নয়, বরং শারীরিক ও মানসিক উন্নতিও ঘটায়।

রোজা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতেও রোজার উপকারিতা অপরিসীম। জীব বিজ্ঞানের গবেষণার ফলে আমরা জানি, প্রতিটি প্রাণীর শরীর একটি উচ্চতর এবং সূক্ষ্ম জৈব রাসায়নিক কারখানা এবং এটিকে সচল রাখতে প্রয়োজন হয় শক্তি। উক্ত শক্তির জোগান দিতে স্রষ্টা জীবজগতের জন্য নানা প্রকারের খাদ্যদ্রব্যের ব্যবস্থা করেছেন। সাধারণত একজন মানুষের এই শক্তি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে কমপক্ষে দৈনিক তিনবার খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করতে হয়। তবে মানুষ উন্নত আত্মা সম্পন্ন জীব হওয়ায় মানুষের সঙ্গে অন্যান্য পশুর পার্থক্য হলো মানুষ তার ক্ষুধা-পিপাসা এবং যৌন প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। রমজান মাস প্রকৃতপক্ষে মানুষকে নিজের প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দেয়।

রোজা নিয়ে বিস্ময়কর তথ্য দিয়ে নোবেল পেয়েছেন জাপানি গবেষক ও বিজ্ঞানী ওশিনরি ওসুমি (ণড়ংযরহড়ৎর ঙযংঁসর)। তিনি ‘অটোফেজি’ নিয়ে গবেষণা করে ২০১৬ সালে নোবেল পেয়েছেন। তিনি প্রতি বছর রোজা রাখেন। এক সাক্ষাৎকারে মুসলমানদের পবিত্র রোজা সম্পর্কে এক বিস্ময়কর তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মুসলমানরা যাকে রোজা বলে, আমি তাকে বলি ‘অটোফেজি’। রোজার মাসে খাবার-দাবারের ঝামেলা, তাই এই মাসটা আমি অটোফেজি করি।

অটোফেজি কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, অটোফেজি গ্রিক শব্দ। অঁঃড় অর্থ নিজে নিজে এবং চযধমু অর্থ খাওয়া। অর্থাৎ অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া। চিকিৎসা বিদ্যায় নিজের গোস্ত নিজেকে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাইরে থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন চিকিৎসা বিদ্যার ভাষায় তাকে অটোফেজি বলা হয়।

আমাদের ঘরে যেমন আবর্জনার স্থান বা ডাস্টবিন থাকে কিংবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে, তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও ডাস্টবিন আছে। সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকায় ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না। ফলে কোষগুলোয় অনেক বর্জ্য জমে যায়। শরীরের কোষগুলো নিয়মিত ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে পারলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে। ক্যানসার বা ডায়াবেটিসের মতো দুরারোগ্য রোগের শুরু হয় মূলত এখান থেকেই।

মানুষ যখন খালি পেটে থাকে, তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তো আর আমাদের মতো অলস হয়ে বসে থাকে না, তাই প্রতিটি কোষ তার ভেতরের বর্জ্যগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে। কোষগুলোর আমাদের মতো আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে। চিকিৎসা বিদ্যার ভাষায় এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি।

রোজায় মানবদেহের শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন

মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মে যে শক্তি ব্যয় হয়, তা আসে খাদ্য থেকে। সাধারণত খাদ্য গ্রহণ এবং শক্তি ব্যয়ের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় থাকতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরে তা অতিরিক্ত মেদ হিসেবে জমা হয় এবং প্রয়োজনের চেয়ে কম খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরের স্বাভাবিক গঠন ভেঙে যেতে থাকে। যেহেতু মুসলিমদের দীর্ঘ একটি মাস রোজা রাখতে হয়, স্বাভাবিকভাবেই এতে ওজন কিছুটা হ্রাস হয়। তবে  সেহরি ও ইফতার নামক সুন্দর ব্যবস্থার কারণে এই ওজন কমে যাওয়ার হার আশঙ্কাজনক পর্যায়ে হয় না। রোজার সময় মানবদেহে শারীরবৃত্তীয় কী কী ধরনের পরিবর্তন হয়, তা জেনে নিলে আমাদের জন্য মানবদেহে রোজার প্রভাব বুঝতে সুবিধা হবে।

এছাড়া রোজা থাকা অবস্থায় কমপক্ষে ১৫ ঘণ্টা যাবতীয় খানাপিনা বন্ধ থাকে। এ সময় পাকস্থলী, অন্ত্র-নালি, যকৃৎ, হৃৎপিণ্ডসহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। তখন এসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিজেদের পুনর্গঠনে নিয়োজিত হতে পারে। অন্যদিকে দেহে যেসব চর্বি জমে শরীরের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, সেগুলো রোজার সময় দেহের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য ছুটে যায়। স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানী তার ‘সুপিরিয়র নিউট্রিশন’ গ্রন্থে ডা. শেলটন বলেছেন, উপবাসকালে শরীরের মধ্যকার প্রোটিন, চর্বি, শর্করা জাতীয় পদার্থগুলো স্বয়ং পাচিত হয়। ফলে গুরুত্বপূর্ণ কোষগুলোর পুষ্টি বিধান হয়।

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ওষুধ ও শল্য চিকিৎসার প্রখ্যাত ডা. অ্যালেকসিস বলেছেন, উপবাসের মাধ্যমে লিভার রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়; ফলে ত্বকের নিচে সঞ্চিত চর্বি, পেশির প্রোটিন, গ্রন্থিসমূহ এবং লিভারে কোষসমূহ আন্দোলিত হয়। অভ্যন্তরীণ দেহ যন্ত্রগুলোর সংরক্ষণ এবং হৃৎপিণ্ডের নিরাপত্তার জন্য অন্য দেহাংশগুলোর বিক্রিয়া বন্ধ রাখে। খাদ্যাভাব কিংবা আরাম-আয়েশের জন্য মানুষের শরীরের যে ক্ষতি হয়, রোজা তা পূরণ করে দেয়।’

ডা. আইজাক জেনিংস বলেছেন, ‘যারা আলস্য ও গোঁড়ামীর কারণে এবং অতিভোজনের কারণে নিজেদের সংরক্ষিত জীবনী শক্তিকে ভারাক্রান্ত করে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার দিকে এগিয়ে যায়, রোজা তাদের এ বিপদ থেকে রক্ষা করে। বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী নাষ্টবারনার বলেন, ফুসফুসের কাশি, কঠিন কাশি, সর্দি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা কয়েকদিনের রোজার কারণেই নিরাময় হয়।’

স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী ডা. আব্রাহাম জে হেনরি রোজা সম্পর্কে বলেছেন, ‘রোজা হলো পরমহিতৈষী ওষুধ বিশেষ। কারণ রোজা পালনের ফলে বাতরোগ, বহুমূত্র, অজীর্ণ, হৃদরোগ ও রক্তচাপজনিত ব্যাধিতে মানুষ কম আক্রান্ত হয়।’ অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, রোজাদার পেপটিক আলসারের রোগীরা রোজা রাখলে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও হাঁপানি রোগীদের জন্যও রোজা উপকারী।

চিকিৎসকদের মতে, রোজার ফলে মস্তিষ্কের সেরিবেলাম ও লিমরিক সিস্টেমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ার কারণে মনের অশান্তি ও দুশ্চিন্তা দূর হয়; যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য মঙ্গলজনক। বহুমূত্র রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে রোজা খুব উপকারী। ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গেছে, একাধারে ১৫ দিন রোজা রাখলে বহুমূত্র রোগের অত্যন্ত উপকার হয়।

জি ফ্রস্ট ও এস পিরানি ১৯৮৭ সালে ১৫ জন সৌদি যুবকের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেন, রমজান মাসে যদিও তাদের খাবার গ্রহণের বারের সংখ্যা কমে গেছে; অন্যদিকে শর্করা, প্রোটিন এবং চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। রোজার সময় যেহেতু পানি পান থেকেও বিরত থাকতে হয়, সেহেতু দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় পরে ঘাম, মল ও মূত্রের মাধ্যমে পানির পরিমাণ কমে যায়। এ অবস্থায় বিভিন্ন হরমোনের মাধ্যমে কিডনি রক্তে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করে।

ক্যালোরি রেস্ট্রিকশনের ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, দিনের গৃহীত ক্যালোরির পরিমাণ কমিয়ে আনলে তা শারীরিক স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং বেশকিছু জটিল অসুখের ফলে সৃষ্ট জটিলতা কমিয়ে আনে; যেমন রক্তনালিতে চর্বি জমে সৃষ্ট অ্যাথেরোসেক্লারোসিস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ।

২০১২ সালে ট্রাবেলসি এবং তার সহযোগীরা দুই ধরনের রোজাদারদের ওপর গবেষণা চালান। যাদের একদল ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে এরোবিক এক্সারসাইজ; যেমন সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটা অনুশীলন করেছে এবং আরেক দল ইফতারের পর একই অনুশীলনগুলো করেছে। তারা দেখেন, রোজা শেষে প্রথমোক্ত দলের শরীরের চর্বি কমলেও পরবর্তী দলে তা অপরিবর্তিত রয়েছে।

২০১৩ সালে ওই একই বিজ্ঞানীদের গ্রুপ তিউনিশিয়ান বডি-বিল্ডারদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, রোজা শেষে তাদের বডি ফ্যাট ও লিন বডি ম্যাসে (চর্বিহীন শরীরের মূল ওজন) কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর কারণ হিসেবে ধারণা করা হয়, বডি-বিল্ডিংয়ে শক্তির খরচ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এরকম হয়েছে। সুতরাং উপরোক্ত গবেষণাগুলো থেকে ধারণা করা হয়, রমজান মাসে ইফতার ও সেহরির সময় খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে ওজন কমবে। যাদের বডি ম্যাস ইনডেক্স আদর্শ সীমা অতিক্রম করে গেছে, যা ২৪ ও তার বেশি, তারা রমজান মাসকে ওজন কমানোর জন্য একটি উত্তম সময় হিসেবে নিতে পারেন।

লক্ষণীয় অন্যান্য সময় মুসলিমরা তিনটি প্রধান মিল (সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার) গ্রহণ করলেও রমজানে দুটো প্রধান মিল  (সেহরি ও ইফতারের খাবার) গ্রহণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, রমজান মাসে মুসলিমদের খাবারের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের ধরনেও বেশ পরিবর্তন আসে। আমাদের দেশে রমজান মাস এলে ইফতারের সময় আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি জাতীয় ভাজাপোড়া খাবারের সঙ্গে হালিম, ছোলা, মুড়ি ইত্যাদি খাওয়া হয়। এছাড়া খেজুরসহ বিভিন্ন ফল ও ফলের রস, চিড়া, দধি, কলা প্রভৃতি খাবার গ্রহণ করা হয়। বিরিয়ানি, তেহারি, পোলাও জাতীয় খাবার গ্রহণের প্রবণতাও বেড়ে যায়। এগুলো পরিমাণ মতো খাওয়া ব্যালান্স ডায়েটিংয়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

অটোফেজি আবিষ্কারের পর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মের বা ধর্ম মানে না অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ সারা বছরে বিভিন্ন সময়ে ‘অটোফেজি করে শরীরটাকে সুস্থ রাখে। অটোফেজিতে ক্যানসারের কোষও মারা যায়! অটোফেজি আবিষ্কার হলো ২০১৬তে, অন্য ধর্মাবলম্বীরা এখন ‘অটোফেজি করছে এর উপকারিতা জেনে। আর মুসলিমরা ‘অটোফেজি করে আসছে হাজার বছর ধরে কিছু না জেনে; শুধু বিশ্বাস করে। অনেক কিছুতেই হয়তো আমরা মানে খুঁজে পাই না কিন্তু এটাই সত্য যে ইসলামে অকল্যাণের কিছু নেই। অথচ আল্লাহ কোরআনে বহু আগেই বলেছেন, আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্যে অধিকতর কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। (সুরা বাকারা-২:১৮৪)।

কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা রোজা রাখলে এ সমস্যা আরও বেড়ে যাবে ভেবে রোজা রাখতে চান না। অথচ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, রোজা রাখলে কিডনিতে সঞ্চিত পাথর কণা ও চুন দূরীভূত হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে, সারা বছর অতিভোজ, অখাদ্য, কুখাদ্য, ভেজাল খাদ্য খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে যে জৈব বিষ জমা হয়, তা দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এক মাস রোজা পালনের ফলে তা সহজেই দূরীভূত হয়ে যায়।

ইসলাম ব্যতীত অন্যান্য ধর্মেও বিভিন্ন ধরনের উপোস থাকার ধর্মীয় রীতির প্রচলন আছে। যেমন অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানদের ক্যালোরি রেস্ট্রিকটেড ফাস্টিং, যেখানে দৈনন্দিন গৃহীত খাবারের ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়, অল্টারনেট ডে ফাস্টিং, যেখানে এক দিন পরপর ২৪ ঘণ্টার জন্য পানি ব্যতীত সব ধরনের খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়। অথচ ইসলামে কয়েক হাজার বছর ধরে রোজা পালিত হয়ে আসছে। রমজান শুধু আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধতা অর্জনের জন্য উপকারি তা নয়, বরং বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আসুন আমরা সব মুসলিম রোজা পালন করি এবং ইহজাগতিক ও পারলৌকিক মুক্তির পথ সহজ করি।

ব্যাংক কর্মকর্তা ও মুক্ত লেখক