Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 5:26 am

বিজ্ঞান ও শিল্পের সুন্দরতম সমন্বয়েই বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব

রাজিব আহমেদ একজন বিক্রয়শিল্পী, প্রশিক্ষক এবং আত্মউন্নয়ন ও অনুপ্রেরণামূলক বইয়ের লেখক। আঞ্চলিক ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গবেষক। বিক্রয় পেশাজীবীরা ভালোবেসে তাকে ‘বিক্রয়বন্ধু’ নামে ডাকেন। চারটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কর্মজীবন পার করে এখন মুক্ত বিক্রয় প্রশিক্ষক। ৪০ হাজারের বেশি বিক্রয় পেশাজীবীকে তিনি প্রশিক্ষিত করেছেন। সম্প্রতি এক আলাপনে তার ক্যারিয়ার ও বিক্রয় পেশার নানা দিক জানার চেষ্টা করেছেন মো. হাসানুজ্জামান পিয়াস

ক্যারিয়ারের পেছনের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই…
রাজিব আহমেদ: চুয়াডাঙ্গা থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকায় আসি। পাস কোর্সে ডিগ্রি পাস করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করি। প্রথমে চাকরি করি বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজারে টেরিটরি সেলস ম্যানেজার হিসেবে। পৌনে দুই বছরের চাকরিকালে একবার বিক্রিতে সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে পুরস্কৃত হই। পরের দুই বছর কেটেছে আরেক বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভারে। এরপর বাংলালিংক হয়ে একটেলে (বর্তমান রবি) চলে আসি। প্রথম তিনটি চাকরিতে সরাসরি বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও চতুর্থ কোম্পানিতে আমাকে বিক্রয় প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই আমি বিক্রয়শিল্পী থেকে বিক্রয় প্রশিক্ষণ-শিল্পী বনে গেলাম। সুদীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছর আমি রবিতে প্রশিক্ষক তথা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এভাবে ক্যারিয়ারের দশম বছরে পদার্পণ করে স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই এবং মুক্ত বিক্রয় প্রশিক্ষণ-শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি।

একজন রাজিব আহমেদ থেকে ‘বিক্রয়বন্ধু’ হয়ে ওঠার গল্পটি জানতে চাই…
রাজিব আহমেদ: চাকরি ছেড়ে স্বাধীন জীবনযাপন শুরু করার পর এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক কোম্পানির প্রায় ৪০ হাজার বিক্রয়কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তারা সবাই এখন বিশ্বাস করেন, বিক্রয় কোনো বাড়তি চাপ বা ঝামেলা নয়, বরং কৌশলগত শিল্প। বিজ্ঞান ও শিল্পের সুন্দরতম সমন্বয়েই নিয়মিত বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। আমার প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাদের পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গি যেমন বদলেছে, বিক্রির কাজটাকেও তারা এখন উপভোগ করতে শিখেছেন! ফলে একেকজন হয়ে উঠেছেন পেশাদার বিক্রয়শিল্পী।
বাংলাদেশে বিক্রয় পেশায় যদি পাঁচ লাখ মানুষ সরাসরি সম্পৃক্ত থাকেন তো গড়ে প্রতি ১২ জনে একজন আমার কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বিক্রয় বিষয়ে আমার বাংলায় লেখা ১৪টি বই আছে। বর্তমানে প্রতি তিনজনে একজন বিক্রয় পেশাজীবীর কর্মজীবন শুরু হয় আমার বই পড়ে। দেশের সাধারণ বিক্রয়কর্মীদের পেশাগত উৎকর্ষসাধনে নিরলস কাজ করে চলেছি। এরই স্বীকৃতিস্বরূপ সবাই আমাকে ভালোবেসে ‘বিক্রয়বন্ধু’ নামে ডাকেন। বিক্রয় পেশার বন্ধু এখান থেকেই ‘বিক্রয়বন্ধু’ কথাটার সূত্রপাত।

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিক্রয়কর্মীদের ভূমিকা সম্পর্কে বলুন…
রাজিব আহমেদ: বিক্রয় পেশা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চাকরি। যেকোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয় ব্যবসা করে লাভের জন্য। ব্যবসার জন্য কোনো পণ্য বা সেবাকে বেছে নেওয়া হয়। বিক্রয় পেশাজীবীদের দায়িত্ব সেই পণ্য বা সেবা সঠিক ক্রেতা বা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিয়ে বিনিময়মূল্য আদায় করা। কেবল বিক্রয় বিভাগ প্রতিষ্ঠানের জন্য আয় করে, বাকি সব বিভাগের কর্মকাণ্ড খরচের খাতায় লিপিবদ্ধ হয়। এ দুয়ের মধ্যে যে ব্যবধান, সেটাই লাভ (প্রফিট) হিসেবে গণ্য হয়।
বিক্রয় বিভাগ না থাকলে অথবা বিক্রয় কর্মীরা কাজ না করলে যেকোনো প্রতিষ্ঠান অচল হয়ে যেতে বাধ্য। এমনকি চিরতরে বন্ধও হয়ে যেতে পারে। একটি কোম্পানিকে যদি গাড়ির সঙ্গে তুলনা করা হয় তো বিক্রয় বিভাগ হলো সেই গাড়ির চাকা। অন্যভাবে বলা যায়, শরীরে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে যেমন প্রাণের স্পন্দন থেমে যায়, বিক্রয়কর্মীরা কোম্পানির লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ না করলে প্রতিষ্ঠানেরও একই দশা হয়।

বিক্রয় পেশার চ্যালেঞ্জ কী? তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ যোগ হচ্ছে কি? এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় কী?
রাজিব আহমেদ: বিক্রয় পেশার চ্যালেঞ্জ অনেক; কয়টা বলব? বলা শুরু করলে তো গুনে শেষ করা যাবে না। পত্রিকার পুরো পৃষ্ঠা ভরে যাবে, তবু তালিকা তৈরি শেষ হবে না। তবে সেগুলোকে চ্যালেঞ্জ না বলে বরং বিক্রয়শিল্পীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রমাণের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবেই দেখতে চাই। যেখানে সমস্যা, সেখানেই তো সমাধান লুকিয়ে আছে। বুদ্ধিমান ও চৌকস বিক্রয়শিল্পীরা সেগুলো কাজে লাগান। তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে এ পেশায় নতুন চ্যালেঞ্জ যেমন যোগ হচ্ছে, সম্ভাবনার নতুন দুয়ারও তো প্রতিনিয়ত উম্মোচিত হচ্ছে। ক্রেতা তথা গ্রাহক এখন অনেক বেশি সতর্ক ও সচেতন। তাদের যেকোনো পণ্য বা সেবা গছিয়ে দেওয়ার সুযোগ আর নেই বললেই চলে। ফলে বিক্রয়শিল্পীদেরও দক্ষ ও যোগ্য হয়ে ক্রেতা বা গ্রাহকের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অর্থাৎ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিক্রয় পেশাও ক্রমেই আধুনিক হয়ে উঠছে!

তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে বিক্রয় পেশার সম্ভাবনা কেমন বলে মনে করেন?
রাজিব আহমেদ: বিক্রয় পেশার সম্ভাবনা এমনিতেই অফুরন্ত। সৃষ্টির শুরুতে বিক্রয় ছিল, শেষ পর্যন্ত থাকবে। মানুষমাত্রই কিন্তু বিক্রয়শিল্পী। কেউ ঘোষিত, আর বাকি সবাই অঘোষিত। আমরা পৃথিবীর বুকে ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারি, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজেকে অন্যদের কাছে বা সামনে ‘বিক্রি’ করতে পারি। যখন সেটা আর পারি না, ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদেরকে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিতে হয়!
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে বিক্রির সম্ভাবনা ও সুযোগ বহুগুণ বেড়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো কিছু কিনতে অথবা যে কারও কাছে যা ইচ্ছা বিক্রি করতে পারছেন। অর্থাৎ সমগ্র পৃথিবীটাই এখন একটা বাজার। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বিশ্বায়নের এই যুগে বিক্রয় পেশার সম্ভাবনা অফুরন্ত তথা অসীম!

সরাসরি বিক্রয় করা আর বিক্রয়কর্ম শেখানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া এ দুটি পেশাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
রাজিব আহমেদ: বিক্রয় পেশাজীবী অগণিত হলেও বিক্রয় প্রশিক্ষক কিন্তু হাতেগোনা। নিজে বিক্রয় পেশাজীবী হিসেবে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের পর প্রশিক্ষক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে হয়। কেউ যখন কোনো বিষয়ে অন্তত ১০ বছর নিরন্তর সাধনা করেন, তখন তিনি সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তারপরও তার শিক্ষা গ্রহণ শেষ হয় না, বরং জীবনভর শিখতে হয়। প্রতিনিয়ত সময়ের সঙ্গে নিজেকে ঋদ্ধ করতে হয়।
আমি যখন সরাসরি বিক্রির কাজ করতাম, তখনও পেশাটিকে উপভোগ করতাম। এখন প্রশিক্ষক হিসেবেও আমার দায়িত্বটিকে যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করি। পাশাপাশি নিজের প্রশিক্ষণ-সেবা বিক্রির কাজটাও আমাকেই করতে হয়। আমি মনে করি, কেউ কখনও ব্যর্থ হবেন না, যদি নিজেকে পুরোপুরি উজাড় করে দিতে পারেন। মানুষ হিসেবে আমাদের দক্ষতা ও যোগ্যতার ঘাটতি থাকতেই পারে, কিন্তু ইচ্ছাশক্তির যেন কমতি না থাকে। আমি একসময় নিজে সরাসরি পণ্য বিক্রির কাজ তদারকি করতাম। এখন যারা বিক্রি করেন, তাদের বিক্রির সেই কৌশলগুলো শেখাই। দুটি পেশা একে অপরের পরিপূরক। আমি উভয় পরিচয়েই স্বচ্ছন্দবোধ করি।

যারা বিক্রয় পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান, তারা নিজেদের কীভাবে গড়ে তুলবেন?
রাজিব আহমেদ: অনেকে মনে করেন সহজে বিক্রয়শিল্পী হওয়া যায়। বাস্তবতা এত সহজ নয়। এজন্য প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। প্রথমত, নেতিবাচক মনোভাব পরিহার করতে হবে। নিজের প্রতি বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে হবে। কারণ বিক্রয় পেশা ব্যর্থ মনোভাবাপন্ন মানুষের জন্য নয়। এখানে শুধু সফল মানুষদেরই বিচরণক্ষেত্র।
বিক্রয় পেশায় গাধার খাটুনি যেমন খাটা লাগে, তেমনি মেধার প্রয়োগও জরুরি। দুয়ের সমন্বয়ে সার্থক বিক্রয়শিল্পী হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। মানুষের সঙ্গে দ্রুত মিশতে পারেন, বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়তে পারেন, ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মাথা ঠাণ্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সব সময় ঠোঁটের কোণে হাসির ঝিলিক ধরে রাখতে পারেন বিক্রয় পেশা তাদের জন্য। এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শুরু থেকে নিজের কাজটাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে সম্মান করতে ও ভালোবাসতে হবে। দ্বিতীয়ত, কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা নিয়ে হাল না ছেড়ে ক্রমাগত লেগে থাকতে হবে। তৃতীয়ত, যত বাধা আসবে তত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। প্রতিকূল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে অতি দ্রুত সঠিক বা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিক্রয় কিন্তু ক্রেতা বা গ্রাহককে ঠকানোর পেশা নয়, বরং অন্যকে জিতিয়ে নিজে বিজয়ী হওয়ার মতো মহান পেশা! ক্রেতা বা গ্রাহকের কাছে বিক্রির চেষ্টা না করে, বরং কিনতে উৎসাহিত করুন। তাদের প্রয়োজনের ক্ষেত্রটি দেখিয়ে দিন। আপনি অবশ্যই সফল হবেন।

যারা বিক্রয় প্রশিক্ষক হিসেবে ভবিষ্যতে কাজ করতে চান তাদের ক্যারিয়ার কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
রাজিব আহমেদ: বিক্রয় প্রশিক্ষক হওয়ার আগে সরাসরি বিক্রয় পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কমপক্ষে পাঁচ বছর প্রত্যক্ষভাবে বিক্রি করার পর সহকর্মী বা অধীনস্থদের জন্য ঘরোয়াভাবে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে, যেখানে আপনি নিজেকে মেলে ধরবেন। পাশাপাশি অন্য বিক্রয় প্রশিক্ষকের কর্মশালায় শিক্ষার্থী হিসেবে নিয়মিত যেতে হবে। সংশ্লিষ্ট বইপত্র পাঠ করতে হবে। ই-লার্নিংয়ে সময় দিতে হবে। এভাবে ১০ বছর অতিবাহিত করার পর বিক্রয় প্রশিক্ষক হিসেবে করপোরেট অঙ্গনে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন।

সফল বিক্রয়কর্মী হওয়ার জন্য আপনার পরামর্শ?
রাজিব আহমেদ: বিক্রয় এমন একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা, যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই! এই পেশার চূড়ান্ত গন্তব্য বলে কিছু নেই, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। বিক্রয় করাই শেষ কথা নয়, প্রতিনিয়ত বিক্রির পরিমাণ বাড়ানোর জন্য রীতিমতো লড়াই ও সাধনা করতে হয়। যতক্ষণ চেষ্টা করবেন, ততক্ষণ সফলতার দেখা পাবেন। হাল ছেড়ে দেবেন, কিংবা ন্যূনতম অলসতা দেখাবেন, ঠিক তখনই পিছিয়ে পড়বেন। বিক্রয় পেশাজীবী এমন কাজ করেন, যেখানে প্রতি মুহূর্তে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। বিরূপ পরিস্থিতিতেও ক্রেতা বা গ্রাহকের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে হয়। ক্রেতার ব্যথায় ব্যথিত কিংবা আনন্দে উল্লাস প্রকাশ করতে হয়। বিক্রয় পেশায় ক্রমাগত সাফল্য ধরে রাখার একমাত্র মূলমন্ত্র ক্রেতা বা গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন ও রক্ষা। রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্টের কোনো বিকল্প নেই। আপনি ক্রেতার স্বার্থরক্ষায় ব্যর্থ হলে আপনার প্রতিযোগী কোম্পানি সেই গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে আপনার ক্রেতা বা গ্রাহক ‘ছিনতাই’ করে নিতে পারে।

বিক্রয় পেশাকেন্দ্রিক আপনার অনেক বই ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আরও একটি বই শিগগির প্রকাশিত হবে। এ সম্পর্কে কিছু বলেন…
রাজিব আহমেদ: বাংলাদেশে ও বাংলা ভাষায় বিক্রয় পেশাবিষয়ক বইয়ের এখন পর্যন্ত আমিই একমাত্র লেখক। ১৭ বছর আগে আমি যখন বিক্রয় অঙ্গনে আমার ক্যারিয়ার শুরু করি, এই পেশাসংশ্লিষ্ট কোনো বাংলা বই পাইনি। আমার মনে হয়েছিল এত মানুষ বিক্রয় পেশায় কর্মরত, কিন্তু তাদের জন্য কোনো গাইডবুক বা নির্দেশিকা থাকবে না, তাও কি হয়? বাংলাদেশে তথা বিশ্বজুড়ে যত রকম পেশাজীবী আছেন, তাদের মধ্যে বেশি মানুষ বিক্রয় পেশায় নিয়োজিত। এই পেশাজীবীদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মানসিকতা থেকেই ২০০৬ সালে ‘বিক্রয় কৌশল’ নামে ছোট্ট একটি বই লিখি। প্রকাশের পরপরই বইটি বিক্রয় পেশাজীবীদের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ বছরে বিক্রয় বিষয়ে আরও ১৩টি বই প্রকাশ করেছি। বলাবাহুল্য, প্রত্যেকটি বই-ই পাঠকমহলে তথা পেশাজীবীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। অন্তত ৫০ বছর বইগুলো আমাকে পৃথিবীর বুকে বাঁচিয়ে রাখবে বলে মনে করি। আমি বিক্রয় পেশাজীবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিক্রয়ের কৌশল শেখাই। বিক্রয়বিষয়ক বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করি।